ভোলায় গুলি করে যুবলীগের নেতাকে হত্যার ঘটনায় গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে মামলা হয়েছে। এতে দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটায় ভোলা সদর উপজেলায় মেঘনা নদীর চেয়ারম্যান বাজার-নাছিরমাঝি নৌপথের হেতনার হাট এলাকায় গুলির ঘটনা ঘটে। এতে সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম (৩২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তিনি পেশায় একজন ঠিকাদার ছিলেন। তিনি স্ত্রী ছাড়াও এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ময়নাতদন্ত শেষে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খোরশেদ আলমের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে সদর উপজেলার জোহরবাদ ধনিয়া ইউনিয়নের ইলিয়াছ মিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাচিয়া ইউপির চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম নিহতের স্ত্রীকে চাকরি এবং দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ কে এম নাছির উদ্দিন পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। জানাজা শেষে খোরশেদ আলমকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পুলিশ জানায়, খোরশেদের ভাই মো. হানিফ বাদী হয়ে জামাল উদ্দিনকে প্রধান করে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন।
মামলার এজাহার ও মেঘনা নদীর মধ্যে অবস্থিত মদনপুর ইউপির চেয়ারম্যান এ কে এম নাছির উদ্দিনের ভাষ্যমতে, ১১ নভেম্বর মদনপুর ইউপির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জামাল উদ্দিনকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন নাছির উদ্দিন। নির্বাচনে হেরে জামাল উদ্দিন বোমাবাজি, ফাঁকা গুলি ছোড়াসহ একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মেঘনা নদীর মধ্যে তাঁদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন ও তাঁর পরিষদের সদস্যরা নির্বাচনের পরে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে শুক্রবার মদনপুরে যান। আসরের নামাজের পরে বশির মাঝির যাত্রীবাহী ট্রলারে ফিরে আসেন। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ট্রলারটি সদর উপজেলা মেঘনা নদীর হেতনার হাট বরাবর এলে জামাল উদ্দিন ওরফে সকেট জামালের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর, বাহার, সাদ্দাম হোসেন, মো. হোসেন, কামাল উদ্দিন, নীরব, শাহিন, আক্তার মফিজসহ একদল সন্ত্রাসী দুটি স্পিডবোট নিয়ে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। এ সময় খোরশেদ আলম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
তবে জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এটা ষড়যন্ত্র। মিথ্যা বানোয়াট। আমাকে নতুন করে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যে নাটক সাজানো হয়েছে।’
ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, তাঁরা আবুল বাশার নামের একজন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছেন। তিনি স্পিডবোট উদ্ধার করতে ঘটনাস্থল এসেছিল। ঘটনাস্থল থেকে একটি স্পিডবোট জব্দ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।