পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী পরিচয়ে সরকারিভাবে হজে পাঠানোর কথা বলে টাকা দাবি

বরিশাল জেলার মানচিত্র

বরিশালে সরকারিভাবে হজে পাঠানোর কথা বলে টাকা দাবি করে এক ব্যক্তির মুঠোফোনে কল করেছে একটি প্রতারক চক্র। এ সময় চক্রটির একজন নিজেকে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক দাবি করে বিকাশের মাধ্যমে ৭০ হাজার টাকা পাঠাতে অনুরোধ করেন।

এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে বরিশাল নগরীর কাউনিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ওই ব্যক্তির ঘনিষ্ঠজন বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আসিফ মাহমুদ।

জাহিদ ফারুক বরিশাল সদর আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

জিডিতে অভিযোগ করা হয়, ৩ মার্চ একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগমের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে কল করে প্রতারক চক্রটি। এ সময় কৌশলে তাঁর নাম ও পেশা জেনে নিয়ে বলা হয়, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে কিছুসংখ্যক লোককে সরকারিভাবে হজে পাঠানোর জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এই তালিকায় খাদিজার নামও রয়েছে। এরপর চক্রটি প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের পরিচয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁকে কথা বলিয়ে দেয়। ওই ব্যক্তি নিজেকে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক পরিচয় দিয়ে তাঁর (খাদিজা) কাছে ৭৫ হাজার টাকা দাবি করে বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলেন। টাকা বিকাশ করে ৩ মার্চ বিকেল তিনটা থেকে চারটার মধ্যে বরিশাল সার্কিট হাউসে খাদিজা বেগমকে উপস্থিত থাকতে বলে চক্রটি। বলা হয়, সেখানে সরকারিভাবে হজে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে সবাইকে ৬০ হাজার টাকার একটি চেক দেওয়া হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য খাদিজা প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) শফিকুল ইসলামের মুঠোফোন নম্বরে কল দেন। শফিকুল খাদিজাকে জানান, এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা প্রতারক চক্রের কাজ। এরপর তাঁকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন শফিকুল। এ জন্য খাদিজার পক্ষে তাঁর ঘনিষ্ঠজন আসিফ মাহমুদ জিডিটি করেন।

প্রতিমন্ত্রীর এপিএস শফিকুল ইসলাম রাতে বলেন, বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ, চরমোনাই, চর কাউয়াম চরবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকজনের কাছে ফোন করে টাকা দাবি করেছে চক্রটি। সবাইকে প্রতারক চক্রটির বিষয়ে সচেতন থাকতে এবং আইনি ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বরিশালের চারটি থানায় পৃথক চারটি জিডি করা হয়েছে।

জিডির বিষয়টি স্বীকার করে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ আর মুকুল বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এভাবে কেউ বিকাশে টাকা চাইলে লেনদেন না করার পরামর্শ দেন ওসি।

এ ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এটি একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত।’ এ ধরনের কোনো প্রলোভনে বরিশালবাসীকে না পড়ার আহ্বান জানান তিনি। তাঁর নাম ভাঙিয়ে কেউ বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বললে সরাসরি তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে কলা করার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।