গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

পাবনা সদর উপজেলার হিমাইতপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন পরবর্তী সংঘাতে আওয়ামী লীগ নেতা শামীম হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে। র‌্যাব সদস্যরা গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে দুই দফা অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করেন।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, মামলার প্রধান আসামি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তারিকুল আলম (৬৯), তাঁর ছেলে মো. ফারুক (৩০) ও মেয়ে আমেনা খাতুন (৪৫)। এ সময় তরিকুলের কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন ও ১১টি গুলি জব্দ করা হয়। পিস্তলটি তাঁর নামে লাইসেন্স করা। আর আমেনার কাছ থেকে একটি একনলা বন্দুক ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই অস্ত্রটি তারিকুলের স্ত্রীর নামে লাইসেন্স করা। পুলিশ অস্ত্রগুলোর লাইসেন্স বাতিলের জন্য ইতিমধ্যে আবেদন করেছে।

এর আগে গত বুধবার সকালে পুলিশ মামলার আরেক আসামি ও তারিকুলের স্ত্রী মালেকা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। এ দিয়ে মামলায় মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
র‌্যাব সূত্র জানায়, গতকাল বিকেলে ইউনিয়নের আফুরিয়া গ্রাম থেকে প্রথমে ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নাজিরপুর হাটপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ আমেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাতে সদর উপজেলার চর তারাপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তারিকুলকে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার কিশোর রায় বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাঁদের পাবনা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
থানা-পুলিশ জানায়, ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে হিমাইতপুর ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোট আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাঁদের মধ্যে ছয়জন ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বিজয়ী হন।

ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলামের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুলের সমর্থকদের বিরোধ চলছিল। নিহত শামীম, মঞ্জুরুলের সমর্থক ছিলেন। নির্বাচনী বিরোধের জেরে তরিকুল লোকজন নিয়ে শামীমের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে শামীম নিহত হন। শামীম হিমাইতপুর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কমিটির প্রচার সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহত ব্যক্তির বাবা নূর আলী সরদার বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আজ শুক্রবার সকালে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো জব্দ করে লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।