ইউপি নির্বাচন
‘পারিবারিক’ ভোটযুদ্ধ আজ
বুুড়িচংয়ের ময়নামতিতে চাচার বিরুদ্ধে ভাতিজা নির্বাচন করছেন। দেবীদ্বারের ফতেহাবাদ ইউনিয়নে একটি পরিবার থেকে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কুমিল্লার বুড়িচং ও দেবীদ্বার উপজেলার দুটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে পারিবারিক ভোটের লড়াই আজ সোমবার। এর মধ্যে বুড়িচংয়ে ময়নামতি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী চাচার সঙ্গে ভাতিজার এবং দেবীদ্বার উপজেলায় ফতেহাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রার্থীর তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। বিষয়টি নিয়ে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নে টানা দুইবারের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী লালন হায়দার। তৃতীয়বারের মতো এবারও তিনি নির্বাচন করছেন। এবারও তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু এবার লালন হায়দারকে পরাজিত করার জন্য মাঠে নেমেছেন তাঁর আপন ভাতিজা যুবলীগ নেতা আদনান হায়দার। আদনান হায়দারের বাবা আখলাক হায়দার বুড়িচং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আদনানের আরেক চাচা তারেক হায়দার কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্য। একই পরিবারের দুজনের লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন ভোটাররা। দুজনই জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
এ বিষয়ে চাচা লালন হায়দার বলেন, ‘দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি নির্বাচন করছি। ভোটাররা নৌকায় ভোট দেবেন।’ আর ভোটে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ভাতিজা আদনান হায়দারও। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এবার ভোটাররা পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবেন। টেবিল ফ্যান মার্কা জিতবে।’
জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখলাক হায়দার বলেন, ‘একদিকে আমার ছেলে, অন্যদিকে আমার ছোট ভাই। আমি পড়েছি বিপাকে। যেহেতু দল করি, আমি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে আছি। লালন তো ১১ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছে। এলাকার মুক্তিযোদ্ধা, মুরুব্বি ও তরুণেরা আদনানের পক্ষে। পারিবারিকভাবে বসে দুজনকে এক করতে পারিনি। আমার মেজ ভাই তারেক হায়দার লালনের পক্ষে আছে।’
এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছয়জন। অপর চার প্রার্থী হলেন ঘোড়া প্রতীকের আবদুল্লাহ আল মামুন, মোটরসাইকেল প্রতীকের আনোয়ার হোসেন, আনারস প্রতীকের মুজিবুর রহমান ও চশমা প্রতীকের সালাহউদ্দিন।
দেবীদ্বারে একই পরিবারের পাঁচজন প্রার্থী: দেবীদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ১৫ জন। এর মধ্যে একই পরিবার থেকে প্রার্থী হয়েছেন পাঁচজন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহনাজ পারভীন, শাহনাজ পারভীনের ভাশুর বর্তমান চেয়ারম্যান আনারস প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার এম এ সালাম, শাহনাজ পারভীনের সৎছেলে মো. আল মামুন, শাহনাজ পারভীনের ভাশুর খন্দকার এম এ সালামের ছেলে খন্দকার ফখরুল ইসলাম ও খন্দকার মজিবুর রহমান। তবে এখানে লড়াই হবে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও ভাশুরের মধ্যে।
এ প্রসঙ্গে শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘আমাকে ঠেকাতে ভাশুরসহ পরিবারের আরও চারজন প্রার্থী হয়েছেন। ভোটাররা দিন শেষে নৌকায় ভোট দেবেন।’
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী খন্দকার এম এ সালাম বলেন, ‘আমার ছেলেরা এমনিতে প্রার্থী হয়েছেন। ওরা আনারসের পক্ষেই আছে।’
ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মফিজুল ইসলাম দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ঢোল প্রতীক নিয়ে এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মাসুদ দোয়াত–কলম প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন। তাঁরা বলেন, একই পরিবারের এত প্রার্থীর ভিড়ে তাঁদের জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকবে।