পালিয়ে যাওয়া ৭ করোনা রোগীকে হাসপাতালে ফেরত

যশোর জেলার মানচিত্র

ভারত থেকে এসে হাসপাতালে ভর্তির পর পালিয়ে যাওয়া করোনায় সংক্রমিত সাত রোগীকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল থেকে দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়া থেকে পুলিশ তাঁদের ধরে হাসপাতালে ফেরত পাঠায়। তাঁদের সবাইকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা জানার পর পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন থেকে সাতজনের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে। এরপর স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় তাঁদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। খুলনায় তিনজন, সাতক্ষীরার দুজন ও যশোরের একজন নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। তবে রাজবাড়ীর একজন কুষ্টিয়ায় তাঁর বোনের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের প্রত্যেককে নিজ জেলার সিভিল সার্জনের সহায়তায় অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

১৮ থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে করোনায় সংক্রমিত সাতজন যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরেন। তাঁরা যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। সেখান থেকে তাঁরা পালিয়ে যান। গত রোববার বিষয়টি জানাজানি হয়। ভারতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় পালানোর এই ঘটনা আতঙ্কের সৃষ্টি করে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, করোনায় সংক্রমিত সাতজন রোগীর মধ্যে ১৮ এপ্রিল একজন, ২৩ এপ্রিল পাঁচজন ও ২৪ এপ্রিল একজন আসেন। তাঁদের জরুরি বিভাগ থেকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। তাঁরা ওয়ার্ডে না গিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান।

এই সাতজন হলেন যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দিপাড়া এলাকার বিশ্বনাথ দত্তের স্ত্রী মণিমালা দত্ত (৪৯), সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপপাড়া গ্রামের মিলন হোসেন (৩২), কালীগঞ্জ উপজেলার শেফালি রানী সরদার (৪০), রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের নাসিমা আক্তার (৫০), খুলনা সদর উপজেলার বিবেকানন্দ (৫২), পাইকগাছা উপজেলার ডামরাইল গ্রামের আমিরুল সানা (৫২) ও রূপসা উপজেলার সোহেল সরদার (১৭)।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ভারত থেকে আসা সাতজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। তাঁদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তির পর করোনা ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভর্তির টিকিট ওয়ার্ডে পৌঁছেছে, কিন্তু রোগীরা সেখানে যাননি। সেখান থেকে তাঁরা পালিয়ে যান।

যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় বলেন, হাসপাতাল থেকে না বলে চলে যাওয়া ভারতফেরত সাত করোনা রোগীকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। গতকাল বিকেল থেকে তাঁদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সর্বশেষ রোগী গতকাল রাত দুইটায় হাসপাতালে এসে পৌঁছান। তাঁদের হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ভারতে করোনা টেস্টের দিন থেকে ১৪ দিন পর পরীক্ষার জন্য তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকবেন।