পিস্তল ঠেকিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ফরমে সই নেওয়ার অভিযোগ

ইউপি নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম রাব্বানীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ফরমে সই নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহ আলমের কর্মীরা বুধবার সন্ধ্যায় তাঁকে অপহরণ করে মাইক্রোবাসের মধ্যে এই স্বাক্ষর নেন। এ ঘটনায় রাতেই গোলাম রাব্বানী বাগাতিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগের বরাত দিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম রাব্বানী জামনগর পুলিশ ফাঁড়ির পাশের সেতুর ওপর দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় দুটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক তাঁকে আটক করেন। তাৎক্ষণিক তাঁকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ফরমে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি না করার জন্য এবং ভোটের মাঠে না থাকার জন্য তাঁকে হুমকি দেন। তা না হলে তাঁকে সপরিবার হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। গোলাম রাব্বানী উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি শামসুজামান মোহনকে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। শামসুজামান নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী শাহ আলমের কর্মী। অভিযোগের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। পুলিশও ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।

আজ দুপুরে গোলাম রাব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বুধবার বিকেলে আমি বাড়ি থেকে রাজশাহী যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছিলাম। জামনগর সেতুর ওপর ওঠামাত্র দুটি মাইক্রোবাসে মোহনসহ ২০-২৫ জন যুবক আমার পথরোধ করে এবং আমাকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরে মাইক্রোবাসের মধ্যে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ফরমে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। আমি ঘটনাটি লিখিতভাবে থানা-পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে তাঁতি লীগের সভাপতি শামসুজামান মোহন বলেন, তিনি এ ধরনের কোনো ঘটনা জানেনই না। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস আলম বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা পর্যন্ত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ফরম কেউ জমা দেননি। নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের দরখাস্ত করতে হলে প্রার্থীকে সশরীর উপস্থিত হয়ে প্রত্যাহার ফরমে স্বাক্ষর করতে হবে। বিশেষ কারণে উপস্থিত থাকতে না পারলে তাঁর পাওয়ার অব অ্যাটর্নিকে থাকতে হবে এবং প্রার্থীকে স্বয়ং ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে হবে। কেউ যদি তাঁর প্রত্যাহার ফরমে সই নেন, তাহলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর জামনগরসহ বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আজ বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল।