ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের এক নেতার তিন ছেলের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার আড়াই মাস পর বিষয়টি তদন্ত করতে মাঠে নেমেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

গত শনিবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের তদন্তদল সরেজমিন এলাকায় যায়। নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন। দলটির সদস্যরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ছাড়াও দলীয় বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনসহ নানা শ্রেণি–পেশার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতা নাজমুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে গত ২৯ মে উপজেলা আওয়ামী লীগ বিষয়টি নিয়ে সভা করে। সভায় বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। তাই শনিবার বিকেলে আমরা সরেজমিন অরুয়াইলে গিয়ে তদন্ত করেছি। দলীয় তদন্ত আরও হবে। অভিযোগের সত্যতা মিললে বিষয়টি আমরা জেলা কমিটিকে জানাব।’

মামলার এজাহার, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরুদ্ধে গত ২৭ মার্চ হেফাজতের সমর্থকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অরুয়াইল বাজারে জড়ো হন। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২০ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার পর ২৮ মার্চ অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পটি প্রত্যাহার করা হয়।

সরাইল থানার এসআই সজল চন্দ্র মজুমদার ৩১ মার্চ মামলা করেন। এতে ৬৫ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ১০০০-১২০০ জনকে। এজাহারে অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেবের ছেলে মো. ইসমাইলের নাম রয়েছে। অন্য দুই ছেলে রয়েছেন সন্দেহভাজনের তালিকায়। তাঁরা হলেন জাকারিয়া ও জয়নাল আবেদিন। ২৭ মার্চের বিক্ষোভে নেতৃত্বদানকারীদের একজন জাকারিয়া। আর জয়নাল আবেদিন বিএনপির সক্রিয় কর্মী।

আবু তালেব গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কোনো ছেলে হেফাজতের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। এক ছেলে আগে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত ছিল, এখন নেই। অরুয়াইল বাজারে আমার ১৬০টি দোকান রয়েছে। বাজারে আমার অফিস ও দোকান রক্ষার জন্য ছেলেরা ওই দিন বাজারে গিয়েছিল। একটি মহল আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য এক ছেলেকে মামলায় জড়িয়েছে। অন্য ছেলেদেরকেও জড়ানোর চেষ্টা করছে।’

২৭ মার্চের ঘটনার পরপর থেকে আবু তালেবের তিন ছেলেই গা–ঢাকা দিয়েছেন। তবে ইতিমধ্যে একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে ছেলেদের নির্দোষ দাবি করেছেন তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হামলার ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্রে আবু তালেবের এক ছেলের জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। অন্য দুই ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।