প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এটা নদেরই জায়গা। সার্ভেয়ারদের দিয়ে দ্রুতই সীমানা নির্ধারণ করা হবে।
অতীত স্মৃতি তুলে ধরে ওই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত একজন শিক্ষক জানালেন, ময়লা ফেলার জায়গাটা নদের ছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, জায়গাটি নদের জেনেও পৌর কর্তৃপক্ষ কেন ভরাট করছে, বুঝতে পারছেন না। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান তাঁর।
কপোতাক্ষ নদের কিছু অংশ ঝিনাইদহের মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। নদটি মহেশপুর উপজেলার পুরন্দপুর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খালিশপুর বাজার পার করে মহেশপুর শহরে প্রবেশ করেছে। শহর পেরিয়ে বৈচিতলা হয়ে আবার শহরের আরেক পাশ দিয়ে বয়ে আজমপুর হয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলায় প্রবেশ করেছে। সেখান থেকে চৌগাছা হয়ে যশোরের কেশবপুরে মিলেছে।
মহেশপুর শহর দিয়ে নদের প্রবাহিত হওয়া অংশ ঘেঁষে রয়েছে মহেশপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ। এর দক্ষিণে মহেশপুর পৌরসভা ভবন। ভবনটির অদূরে নদের ধার ঘেঁষে ফেলা হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য। জায়গাটিতে আগে বসার জন্য বেঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল, বর্জ্যে তা এখন ঢেকে গেছে।
জায়গাটি হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তি। সেখানে মাছবাজার করা হচ্ছে, নদের জায়গা আরও নিচে।
সরেজমিন দেখা যায়, যেখানে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে, সেখানে নদের প্রশস্ততা ১৩০ থেকে ১৪০ ফুট। পানিতে গিয়ে পড়েছে অনেক বর্জ্য। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, বর্ষাকালে পানি-বর্জ্য একাকার হয়ে যায়। রাস্তা পর্যন্ত চলে আসে নদের পানি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল প্রথম আলোকে বলেন, বর্ষায় জোয়ারের পানি যতটুকু ওঠে, তার থেকে আরও ১০ মিটার পর্যন্ত নদের জায়গা। সে স্থান দখল বা কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না।
মহেশপুর পৌর সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এটা নদেরই জায়গা। সার্ভেয়ারদের দিয়ে দ্রুতই সীমানা নির্ধারণ করা হবে।’
পৌর মেয়র আবদুর রশিদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুঠোফোন বলেন, পৌরসভার ময়লা ফেলার জন্য আলাদা জায়গা কেনা হয়েছে, কিন্তু সেখানে এখন ধান চাষ করা হয়েছে। ধানের মৌসুম শেষ হলে বর্জ্য সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন নদের তীরে ময়লা ফেলা হবে না। মহেশপুরের ইউএনও নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, তিনি মঙ্গলবারই উপজেলায় যোগদান করেছেন। বিষয়টি শুনেছেন, দেখারও আশ্বাস দিয়েছেন।