প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেতে চাঁদা, আ.লীগ নেতা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে
প্রতীতী ছবি

পাবনার সাঁথিয়ায় মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁর স্ত্রীর নামে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবদুল্লাহ আল জাবির বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলাটি করেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ ও তাঁর স্ত্রী মেরিনা আকতার। সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ ঘর বাবদ ওই দম্পতির কাছে ৫৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু অসহায় পরিবারটি টাকার জোগাড় করতে না পারায় তাঁকে ঘরের বরাদ্দ বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়।

স্থানীয় ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে উপজেলা বিভিন্ন গ্রামের ৩৭২ জন দরিদ্র ও গৃহহীন মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে করমজা ইউনিয়নের মল্লিকপাড়া গ্রামের বরফ বিক্রেতা ফজর মণ্ডলের স্ত্রী মমতাজ বেগমের নামে একটি ঘর বরাদ্দ হয়। ওই দম্পতির নিজের কোনো ঘরবাড়ি নেই। অন্যের বাড়িতে মাসে দেড় হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে বসবাস করতেন। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের ঘরের চাবি বুঝে দেন। এর মধ্যেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ ঘর বাবদ ওই দম্পতির কাছে ৫৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু অসহায় পরিবারটি টাকার জোগাড় করতে না পারায় তাঁকে ঘরের বরাদ্দ বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়। পরে ওই দম্পতি খুব কষ্টে পাঁচ হাজার টাকা জোগাড় করে ওই আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর কাছে জমা দেন। এরপরও তাঁরা ক্ষান্ত না দিয়ে বাকি ৫০ হাজার টাকা দ্রুত পরিশোধের জন্য তাগিদ দিতে থাকেন। কিন্তু ওই দম্পতি টাকা না দিতে পারায় একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবু দাউদের স্ত্রী মেরিনা খাতুন ওই দম্পতির কাছ থেকে ঘরের চাবি কেড়ে নেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জামাল আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, বরাদ্দ করা ঘরের চাবি হারিয়ে ভুক্তভোগী মমতাজ বেগম উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান। পরে তিনি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পরবর্তী সময়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী আজ বিকেলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা আবু দাউদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভবিষ্যতে আরও বড় নেতা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হব। আমার এই ক্যারিয়ার নষ্ট করার জন্য একটি পক্ষ আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’