প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করলেন নৌকার প্রার্থী, ব্যালট ছিনিয়ে নৌকায় সিল
জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের একটি কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী দলবল নিয়ে হামলা করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেন। এ সময় তাঁরা সেসব ব্যালট পেপারে নৌকা মার্কায় সিল মারতে থাকেন। নৌকার প্রার্থী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার শার্টের কলার চেপে ধরে তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা সেখানে এসে ব্যালটে সিল মারতে বাধা দিলে মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় চারটি ব্যালটবাক্স ভাঙচুর ও ছিনতাই করা হয়। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে ওই ইউপির বুখুঞ্জা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে আপাতত এ কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকে ওই কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছিল। বেলা একটার দিকে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. বদরুল হাসান মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ওই কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। তাঁর উপস্থিতিতে জোরপূর্বক ব্যালট পেপার নিয়ে নৌকা মার্কায় সিল দেওয়া শুরু হয়। ভয়ে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সবাই একটি কক্ষে লুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। ওই ব্যালট পেপার শেষ হওয়ার পর নৌকা প্রার্থীর লোকজন ব্যালট পেপার নিতে ওই দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। পরে ব্যালট পেপার নিয়ে আবার সিল মারতে থাকেন। এ কাজে নিষেধ করায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আছাদুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেন প্রার্থী বদরুল হাসান।
আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. বদরুল হাসান মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ওই কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। তাঁর উপস্থিতিতে জোরপূর্বক ব্যালট পেপার নিয়ে নৌকা মার্কায় সিল দেওয়া শুরু হয়।
এদিকে সিল মারার খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নাজমুল হকের কর্মী-সমর্থকেরা এসে বাধা দেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে ব্যালট পেপার ভর্তি চারটি বাক্স ভাঙচুর ও ব্যালট পেপার পুকুরে ফেলা হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আছাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পৌনে একটা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছিল। হঠাৎ একটি মোটরসাইকেলের বহর আসার পর পরিস্থিতি অন্য রকম হয়ে যায়। হামলাকারীরা কেন্দ্রে ঢুকেই ব্যালট পেপার তাঁদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। তাঁরা আমাকে লাঞ্ছিত করে এসব কর্মকাণ্ড ঘটান। কেন্দ্রে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এ সময় অসহায় ছিলেন। কোনোরকমে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রাণে রক্ষা পান। ব্যালটভর্তি চারটি বাক্স ভাঙচুর ও ব্যালট পেপার পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে আপাতত এ কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।’