ফরিদপুরে আ.লীগের বর্ধিত সভা ঘিরে উৎসবের আমেজ

আগামীকাল শনিবার ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা। এই উপলক্ষে বিলবোর্ড পোস্টার-ব্যানার, তোরণে ছেয়ে গেছে ফরিদপুর শহর। শহরের গোয়ালচামট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হবে আগামী ১২ মে। এর অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা। এ সভাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

নিজের ছবির সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি দিয়ে ব্যানার, বিলবোর্ড ও তোরণ নির্মাণ করেছেন আগামী সম্মেলনে দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা। শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে শুরু করে ভাঙ্গা রাস্তার মোড়, র‌্যাফেলস ইনের মোড়, গোরস্থান মোড়, আলীপুর মোড়, জনতা ব্যাংকের মোড়, খন্দকারের মোড় হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত ছেয়ে গেছে ব্যানার আর তোরণে।

শহরের গোয়ালচামট মহল্লায় হোটেল র‌্যাফেলস ইনে আগামীকাল দুপুরে বর্ধিত সভা হবে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহর। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বর্ধিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাংসদ কর্নেল (অব.) ফারুক খানের। অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংসদ মীর্জা আজম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাংসদ ইকবাল হোসেনেরও উপস্থিত থাকার রয়েছে।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২২ মার্চ জেলার আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। পরে ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।

এরই মধ্যে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের রাজনীতির পটপরিবর্তন হয়েছে। অনেকটা ক্ষমতাশূন্য হয়ে পড়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও ফরিদপুর সদর আসনের সাংসদ খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ফরিদপুর আওয়ামী লীগ বর্তমানে দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে চলছে। একটি হলো আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাফর উল্যাহর সমর্থিত অংশ; অপরটি যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাংসদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের সমর্থিত অংশ।

মোশাররফ যুগের অবসানের পর বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত সম্মেলন নিয়ে দুই বছর ধরে গ্রুপিং, লবিং ও দৌড়ঝাঁপ চলছে। সম্মেলন সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টিতে আসার জন্য জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রাপ্তির আশায় শহরের আনাচকানাচে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকেরা। পদ পাওয়ার প্রচারণায় সভাপতির তালিকায় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামীম হক, সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ফারুক হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল হক।

সাধারণ সম্পাদকের পদপ্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন বর্তমান ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্না হাসান, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা লিয়াকত হোসেন, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক দীপক কুমার মজুমদার, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান ও ফরিদপুর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি যশোদা জীবন দেবনাথ।

বর্ধিত সভা প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, একটি বড় দলের গ্রুপিং থাকতেই পারে। তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে কেউ সেটা প্রমাণ করা দুঃসাহস দেখাবেন না বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, এরই মধ্যে বর্ধিত সভার সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের দাওয়াত ও তাঁদের আপ্যায়নের সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।