ফরিদপুরে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৩ জনের করোনা শনাক্ত
ফরিদপুরে আজ সোমবার নতুন করে আরও ৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলে জেলায় করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। ফরিদপুর করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আজ এ হাসপাতালে ৯১ জন করোনা পজিটিভ ব্যক্তি চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে আইসিইউ চিকিৎসাধীন ১৩ জন।
ফরিদপুর করোনা শনাক্তকরণ ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত রোববার শনাক্তের হার ছিল ৫৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। তার আগের দিন গত শনিবার শনাক্তের হার ছিল ৪৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ফরিদপুরের করোনা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। একদিন বাড়ছে তো আরেক দিন কমছে। এর কারণটি ঠিক বুঝে ওঠা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ফরিদপুরের সভাপতি আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, করোনা শনাক্তের হার ৩০ শতাংশ অতিক্রম করলেই সে অবস্থাকে ‘সিরিয়াস’ ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এখনই সব মহলের সতর্ক না হলে মহাবিপদ ঘটে যেতে পারে।
লকডাউন করতে হলে কঠোর লকডাউন করতে হবে। কাউকে সাত দিনের জন্য বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া যাবে না। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বিমা খোলা রেখে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে না।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা থেকে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৩৪৭ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৮৮ জন। এর মধ্যে ফরিদপুরের বাসিন্দা ৬৯ জন। বাকিরা আশপাশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।
এদিকে জেলার করোনা পরিস্থিতির অবনতির মুখে আজ বেলা তিনটার দিকে করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এ সভায় করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করার জন্য করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের পাশাপাশি ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলেশন নিশ্চিত করাসহ নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলার প্রকৃত অবস্থা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অবগত করে লকডাউনের মতো জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় কি না, সে বিষয়ে সিভিল সার্জনকে অনুরোধ জানানো হয়।
সভায় ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, লকডাউন করতে হলে কঠোর লকডাউন করতে হবে। কাউকে সাত দিনের জন্য বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া যাবে না। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বিমা খোলা রেখে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে না।
জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে কাজ করতে হবে। এখন থেকে রাত আটটার পর ওষুধ, হোটেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়া সব ধরনের দোকান বন্ধ থাকার নির্দেশ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। জেলার সার্বিক করোনা পরিস্থিতি উপজেলাভিত্তিক মূল্যায়নের মাধ্যমে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে পরবর্তী সভা আয়োজন করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।