সেমিস্টার, হল ও পরিবহন ফি হ্রাস, বিভাগ উন্নয়ন ফি বাতিলসহ সাত দফা দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা সেখানে অবস্থান নিয়ে সাত দফা দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। সকাল ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। রাত ১০টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চলে গিয়ে আবার আজ সকালে আসেন।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল রাজু আজ সকাল ৯টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ২৪ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। আবদুল্লাহ আল রাজু বলেন, ‘আজ সকাল ৯টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ২৪ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি চলবে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এবং যত দিন শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস সৃষ্টি না হবে, তত দিন আমাদের আন্দোলন চলবে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল রাজু আজ সকাল ৯টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ২৪ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, ‘এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও প্রক্টর আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন, নতুন উপাচার্য আসার পর আমাদের দাবি মানা হবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আমরা দেখলাম, আমাদের কোনো দাবিই মানা হয়নি। আমাদের দাবি ছিল হলের ভাড়া ৩৫০ টাকার স্থলে ১৫০ টাকা, পরিবহন ফি ৬০০ টাকার বদলে ৩০০ টাকা করা এবং ডিপার্টমেন্ট উন্নয়ন ফি ১ হাজার ৫০০ টাকা বাতিল করতে হবে। আগে রেজিস্ট্রেশনের তারিখ ঘোষণার পর আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবিসহ একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করে, আমাদের অবজ্ঞা করে কর্তৃপক্ষ তার পরদিনই আবার বর্ধিত ফিসহ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাই এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ফিরে যাব না।’
বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব বলেন, ‘কাল বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে ফি–সংক্রান্ত বিষয়টি সমাধান করব। ইতিমধ্যে আমরা করোনাকালের পরিবহন ফি এবং হল ফি সম্পূর্ণ মওকুফ করেছি। এ ছাড়া আরও কিছু ফি কমানো হয়েছে। এরপরও শিক্ষার্থীদের কোনো দাবি থাকলে আমি সেগুলো শুনব। এসব বিষয়ে রিজেন্ট বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ে যেসব নির্দেশনা আছে, তাঁদের জানাব। আমি একা কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গতকাল নতুনভাবে নির্ধারিত ফিসমুহ প্রকাশ করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তি দেখার পর শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন শুরু করেন।