ফুলবাড়িয়া থেকে চৌরাস্তা আসার খরচ ২৫০ টাকা, গুনলেন ৭২০ টাকা

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা দিয়ে মানুষ ঢাকার দিকে যাচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায়
ছবি: মাসুদ রানা

সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ অমান্য করেই মানুষ কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। সড়কে যানবাহন না থাকায় পায়ে হেঁটেই তাঁরা ছুটে চলেছেন। প্রায় সবারই গন্তব্য রাজধানী ঢাকা। মহাসড়কে থাকা বিভিন্ন চেকপোস্টে থাকা পুলিশের সদস্যরা মানুষের চলাফেরা আটকাতে পারছেন না।

কেউ হেঁটে, কেউ রিকশায়, আবার কেউবা উঠেছেন পণ্যবাহী ট্রাকে। যে যেভাবে পারছেন, ছুটে চলেছেন। কারও মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। কঠোর বিধিনিষেধও তোয়াক্কা করছেন না কেউ। মহাসড়ক ধরে চলাচল করা মানুষদের একটাই কথা, তাঁদের কাজে ফিরতে হবে। তাই হেঁটেই ঢাকায় যাচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

রুহুল আমিন চাকরি করেন টঙ্গীর চেরাগ আলী হক গ্রুপে। ঈদের আগের দিন গিয়েছিলেন গ্রামের বাড়ি। কারখানা খুলে দিয়েছে গতকাল। চাকরি বাঁচাতে বিধিনিষেধের মধ্যে ভেঙে ভেঙে এসেছেন চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থেকে অটোরিকশায় ১২০ টাকা দিয়ে এসেছেন ময়মনসিংহে। এরপর ময়মনসিংহ থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ত্রিশালে পৌঁছান ২০০ টাকা দিয়ে। ত্রিশাল থেকে অটোরিকশায় ২৫০ টাকা দিয়ে মাওনায় যান। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে ১৫০ টাকা দিয়ে পৌঁছান চান্দনা চৌরাস্তায়। তিনি বলেন, ‘৭২০ টাকা খরচ করে চৌরাস্তা পর্যন্ত এসেছি। অথচ স্বাভাবিক সময়ে ২৫০ টাকায় চলে আসি।’

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থেকে মিরপুরে যাওয়ার জন্য স্ত্রীসহ ভোর চারটায় রওনা দিয়েছেন আবুল হাসান। তিনি বলেন, ‘ভোর চারটায় জনপ্রতি ৪০০ টাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে এসেছি গাজীপুরের সালনায়। সালনা থেকে ৪০ টাকা ভ্যান ভাড়া দিয়ে এসেছি চৌরাস্তায়। এখানে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু ঢাকা যাব কীভাবে, এটাই চিন্তার বিষয়।’

কোনাবাড়ী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর গোলাম ফারুক বলেন, সড়কে কোনো যানবাহন চলতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি রিকশা বা অটোরিকশাও তেমনটা চোখে পড়ে না। গাজীপুরের চন্দ্রা হয়ে গতকাল সোমবার থেকে উত্তরবঙ্গের মানুষ হেঁটে গাজীপুরের দিকে ঢুকছেন। শত চেষ্টা করেও এসব মানুষের চলাফেরা বন্ধ করা সম্ভব নয়।

ভ্যানে করে মানুষ কর্মস্থলে ফিরছেন। গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক বিভাগ) মেহেদী হাসান বলেন, যানবাহন চলতে দেওয়া হচ্ছে না। কিছু কিছু পণ্যবাহী গাড়ি ও জরুরি সেবা দেওয়া গাড়ি ছাড়া কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে সাধারণ মানুষ তাঁদের কর্মস্থলে ফেরার জন্য যেভাবে ছুটে চলছেন, তা বন্ধ করা যাচ্ছে না। গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের একাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। তারা জিজ্ঞাসাবাদ করে যেতে দিচ্ছে। অপ্রয়োজনে কেউ বের হয়ে থাকলে তাদের ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।