ফেনীতে টিকা নিতে নারীদের ভিড় বেশি
ফেনী আলিয়া মাদ্রাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রের সামনে মিজান ময়দানে আজ রোববার সকালে টিকার জন্য মানুষের ছিল দীর্ঘ লাইন। তবে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা ছিল দ্বিগুণের বেশি। তবে লাইনে দাঁড়ানো লোকজনের মুখে মাস্ক থাকলেও সবাই গা–ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়ান।
সকাল সাতটা থেকে টিকার জন্য নারী-পুরুষ লাইন ধরে দাঁড়াতে শুরু করেন। ৯টার মধ্যে ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে যান, যা ওই কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দকৃত টিকার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। কেন্দ্রটি ফেনী পৌরসভার মিজান ময়দান ও বারাহিপুর এলাকা নিয়ে গঠিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্য নির্ধারিত ছিল।
কেন্দ্রে শুধু ওই ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্য বরাদ্দ ছিল ২০০ টিকা। ফলে অন্য ওয়ার্ড থেকে বা কাজের সুবাদে ফেনীতে বসবাসকারী অন্য কোনো জেলার লোক এখানে টিকা নিতে গেলে তাঁদের ফেরত যেতে হয়েছে। এ ছাড়া ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়েও অনেকে টিকা নিতে না পেরে ফেরত গেছেন।
১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছালেহা খাতুন সকাল ৮টায় লাইনে দাঁড়িয়ে বেলা সাড়ে ১০টায় জানতে পারেন, তিনি এখানে টিকা পাবেন না। সেখানে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবীরা তাঁকে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ বা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নাম নিবন্ধনের পরামর্শ দেন। একইভাবে খুলনার সুফিয়া বেগম ফেনীতে সপরিবার ভাড়া বাসায় থাকেন। অন্যের বাসায় কাজ করেন। স্বামী দিনমজুর। তিনিও ওই কেন্দ্রে টিকা নিতে গেলে তাঁকেও একই পরামর্শ দিয়ে বিদায় করা হয়।
৬০ বছর বয়সী ফেনী আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আমজাদ হোসেন জানান, টিকাদানকেন্দ্রে কিছুটা দেরিতে পৌঁছেও তিনি বয়সের কারণে অগ্রাধিকার পেয়ে বেশ খুশি হয়েছেন।
সকাল সাড়ে ৯টায় টিকা দেওয়া শুরু হয়। বেলা ২টার দিকে ২০০ জনকে টিকা দেওয়া শেষ হয়।
কেন্দ্রে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবকদের একজন মো. বাবলু জানান, ২৫ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও তাঁরা বয়স্ক নারী ও বয়স্ক পুরুষদের অগ্রাধিকার দিয়েছেন। বয়স্করা লাইনের পেছনে দাঁড়ালেও তাঁদের প্রাধান্য দিয়ে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি জানান, পুরুষ ও নারীদের জন্য দুটি পৃথক বুথ করা হয়েছে। নারীদের টিকা দিয়েছেন নারী কর্মীরা আর পুরুষদের টিকা দেন পুরুষ ইপিআই কর্মী।
আজ ফেনী পৌরসভার ৬টি ওয়ার্ডে ২০০ জন করে মোট ১ হাজার ২০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়। তবে সব ওয়ার্ডের সব কেন্দ্রেই প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী টিকাদানকেন্দ্র পরিদর্শন ও প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজ নিজ কেন্দ্রে তদারকিতে ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ফেনী পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ডে গত শনিবার প্রথম পর্যায়ে গণটিকা দেওয়া হয়েছে।