ফেরিঘাটে যানজটে আটকে থাকা ট্রাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় ফেরিঘাটে যানজটে আটকে থাকা পণ্যবাহী কয়েকটি গাড়ির চালককে অস্ত্র ঠেকিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার শ্রীদাম দত্তপাড়া এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ওই ঘটনা ঘটে।
ছিনতাই হওয়া যানবাহনের চালকেরা জানান, গতকাল গভীর রাতে গোয়ালন্দ উপজেলা কোর্ট চত্বর এলাকায় স্থাপিত বিআইডব্লিউটিসির ওজন স্কেল থেকে জমিদার ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় আটকে থাকা পণ্যবাহী কয়েকটি গাড়ির চালককে ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে তাঁদের কাছে থাকা টাকা, মুঠোফোনসহ অন্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন দুর্বৃত্তরা।
সাতক্ষীরা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী ট্রাকের চালক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে জমিদার ব্রিজ এলাকায় এসে ওজন স্কেলের সিরিয়ালে আটকে পড়ি। এ সময় গাড়ি থেকে নিচে নামামাত্র পাঁচ ছিনতাইকারী আমাকে ঘিরে ফেলে। এরপর আমার গলায় ছুরি ধরে তারা। তাদের তিনজনের হাতে ছিল রামদা। অস্ত্রের মুখে তারা আমার কাছে থাকা আট হাজার টাকাসহ মানিব্যাগ ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়।’
ছিনতাইয়ের শিকার আরেক ট্রাকচালক দ্বীন ইসলাম বেনাপোল থেকে সুতা নিয়ে মানিকগঞ্জে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার ট্রাকটি গতকাল রাত সোয়া তিনটার দিকে জমিদার ব্রিজ ও গোয়ালন্দ রেলগেটের মাঝামাঝি এলাকায় এসে ওজন স্কেলের সিরিয়ালে আটকে পড়ে। এ সময় প্রথমে দুই ছিনতাইকারী এসে গাড়ির গেট খুলতে বলে। আমি হেলপারকে গেট খুলতে নিষেধ করি। এরপর তাদের একজনের হাতে থাকা রামদা দিয়ে কোপ মেরে গেটের গ্লাস ভেঙে ফেলে। আমার সহযোগী ভয়ে গেট খুলে দেন। এ সময় আরও তিনজন এসে ছুরি ধরে আমার কাছে থাকা ২ হাজার ২৭০ টাকা নিয়ে যায়। শুনেছি, তারা সিরিয়ালে আটকে থাকা পণ্যবাহী আরও ৫-৭টি ট্রাকে ছিনতাই করেছে।’
গোয়ালন্দ রেলগেট এলাকায় মহাসড়কের পাশে রয়েছে মো. ওমর ফারুকের মুদিদোকান। রাতে দোকানেই থাকেন তিনি। ওমর ফারুক বলেন, ‘কিছু দিন ধরে দু–এক দিন পরপর চিৎকারের শব্দে জেগে উঠি। গতকাল রাতের ঘটনার পরও জেগে উঠেছি। এ রকম ঘটনা এখানে প্রতিনিয়ত ঘটছে। মধ্যরাতে ছিনতাইকারীর দল রাস্তার ঢাল ও গাছের আড়ালে লুকিয়ে থেকে সুযোগ মতো আক্রমণ করে।’
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান গোয়ালন্দ ঘাট থানা–পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদারসহ পুলিশের একটি দল। স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী চালকসহ অন্যদের কাছ থেকে মৌখিকভাবে ঘটনাটি জেনেছি। অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ডাকাতির ঘটনা সম্পর্কে জানা নেই বলে জানান, গোয়ালন্দ মোড় আহ্লাদীপুর হাইওয়ে থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘ওই এলাকাটি গোয়ালন্দ ঘাট থানা–পুলিশ দেখভাল করে। এরপরও খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’