নদীতে ফেরি না দিয়ে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে স্থানীয়দের মানববন্ধন। আজ সোমবার দুপুরে নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় তিতাস নদীর মনতলা-সীতারামপুরে ফেরি না দিয়ে নির্মাণাধীন সড়ক সেতুর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সীতারামপুর ও দৌলতপুরের বাসিন্দারা যৌথভাবে তিতাস নদীর পাড়ে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন।

মানববন্ধনে গ্রামের লোকজন বলেন, কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন থেকে উপজেলা সদর যেতে হলে মনতলা-সীতারামপুর ঘাট দিয়ে নৌকার মাধ্যমে তিতাস নদী পার হতে হয়। উপজেলা সদর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে তিতাস নদীর ২০০ মিটার এলাকা পারাপারে জন্য বর্তমানে নৌকা ব্যবহার করা হয়। এখন ইজারাদারের লোকেরা নৌকার স্থলে ফেরি বসিয়ে মানুষের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তাই ফেরি চালু না করে মনতলা-সীতারামপুর সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সওজের তত্ত্বাবধানে ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে তিতাস নদীর সীতারামপুর ঘাট থেকে নবীনগর সদরে সংযোগের জন্য ৫৫৮ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। সেতুটির ১১টি পিলারের মধ্যে সব কটি পিলার স্থাপন শেষ হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স ও হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ পায়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাঁরা কাজ শুরু করে। আগামী ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে সীতারামপুর ঘাট থেকে ফেরি চলাচলের উদ্যোগ নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।

ফেরি না চালানোর দাবি জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফেরি চালু করলে মনতলা ও সীতারামপুর দুই প্রান্তে নদীর তীরে ৩০ ফুট গভীর খনন করতে হবে। এতে তীরের আশপাশের বাড়িঘর নদীভাঙনের কবলে পড়বে। তা ছাড়া একশ্রেণির প্রভাবশালী মহল নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করে ফায়দা লুটবে। এতে স্থানীয় কৃষকের শত শত ফসলি জমি ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই এখন আর তাঁরা ফেরি চান না। নির্মাণাধীন সেতুটির নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হোক।

মানববন্ধনে সীতারামপুর গ্রামের ইউপির সাবেক সদস্য কালন মিয়া, আউয়াল মিয়া, সাহেব আলী মিয়া, শাহিন মিয়া, আশু মিয়াসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল সীতারামপুর বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

সওজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু করোনা মহামারি সেতুর কাজে প্রভাব ফেলেছে। তা ছাড়া সেতুর সঙ্গে অ্যাপ্রোচ সড়কও সংযুক্ত রয়েছে। সেখানে জায়গা অধিগ্রহণের বিষয়ও আছে। তাই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে বলে প্রাথমিকভাবে আশা করছেন।