বই বিক্রি ছেড়ে শহিদুল ধরেছেন হরেক মাল

শহিদুল ইসলাম
ছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুর শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার একটি বইয়ের দোকানের কর্মচারী ছিলেন শহিদুল ইসলাম (৪০)। বছর পাঁচেক আগে চাকরি ছেড়ে দেন। স্বল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করেন পুরোনো বই বিক্রির ব্যবসা। ভ্যানে বই নিয়ে দাঁড়াতেন শহরের কাছারি এলাকায়। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনেক সময় অভিভাবকেরাও শহিদুলের কাছ থেকে পুরোনো বই কিনতেন।

করোনা মহামারিতে দেড় বছরের বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ পেশার কষ্ট বুঝেছেন শহিদুল। বেচাকেনা একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েছেন পেশা পরিবর্তনে। হরেক মাল বিক্রি করে এখন পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাচ্ছেন।

শহিদুল একা নন। কাছারি এলাকায় ভ্যানে বই বিক্রি করেন ১৩ জন। কাছারি থেকে সামান্য দূরে খাদ্যগুদাম রোডের দুই পাশে পুরোনো বইয়ের লাইব্রেরি আছে ১১টি। করোনা মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাঁদের প্রত্যেকেরই জীবন চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। স্বল্প পুঁজির এই ব্যবসায়ীরা বলেন, বই কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নয়, এ ব্যবসার মূল হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমনিতেই বই কেনার মানুষ কমে গেছে, তার ওপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। জমানো পুঁজি শেষে অনেকে এখন ধারদেনা করে সংসারের খরচ মেটাচ্ছেন।

সম্প্রতি শহরের কাছারি এলাকায় পুরোনো বইয়ের মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ভ্যানে বই বিক্রেতা ১৩ জনের মধ্যে ৬ জন বই নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের পাশেই বসা শহিদুল ইসলাম, তবে তাঁর ভ্যানে বই ছিল না। বিক্রি করছিলেন আয়না, চিরুনি, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, রুমালসহ যাবতীয় হরেক মাল। শহিদুল বলেন, গুদামে সাত থেকে আট হাজার বই পড়ে আছে। বাধ্য হয়ে ব্যবসা বদল করেন। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে আবারও বইয়ের ব্যবসায় ফিরবেন।

খাদ্যগুদাম রোডে মোমিন বুক হাউসের স্বত্বাধিকারী মোমিনুল ইসলাম (৩৫) বলেন, বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে বেচাবিক্রি বেশি হয়। চাকরির প্রস্তুতির বইও বিক্রি করতে পারছেন না। বিধিনিষেধের মধ্যে সবকিছুই দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। এখন শিথিল করা হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো খবর পাচ্ছেন না।