বগুড়ায় ছাত্রলীগের এক পক্ষের ওপর অপর পক্ষের হামলা
বগুড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের এক পক্ষের ওপর অপর পক্ষের হামলা ও সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকবির ইসলাম খান ছুরিকাঘাত হয়েছেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আরও ৯ নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাকবির ইসলাম খানের ওপর সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফের নেতৃত্বে হামলা ও দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ছুরিকাঘাতে আহত বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাকবির ইসলামের আঘাত গুরুতর। আহত ব্যক্তিদের বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যরা হলেন তাকবির ইসলামের সমর্থক শান্ত, ইমন, সাজিদ ও হাবিব। তাঁরা সরকারি শাহ সুলতান কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের নেতা আবদুর রউফের সমর্থক আহত ব্যক্তিরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সদস্য জাহিদ হাসান, ছাত্রলীগ কর্মী সানজিদ, দুলাল ও রাজন।
ঘটনার পরপরই শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত ব্যক্তিদের দেখতে যান বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আসাদুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায়।
আসাদুর রহমান বলেন, তাকবির ইসলামকে ছুরিকাহত করা হয়েছে। তাঁর মাথায়ও চোট লেগেছে। তাঁর ওপর হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। ছাত্রলীগে এ রকম উচ্ছৃঙ্খলতা মেনে নেওয়া যায় না।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে এসেছেন। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির কারণ এখনো তাঁদের অজানা। তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাকবির ইসলামের সঙ্গে থাকা তাঁর সমর্থকদের অভিযোগ, আবদুর রউফের নেতৃত্বে সাতমাথায় তাকবিরসহ অন্যদের ওপর হামলা চালানো হয়।
তবে আবদুর রউফ অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনার জেরে তাকবিরের নেতৃত্বে তাঁর সমর্থকেরা আমার এবং কয়েকজন নেতা-কর্মীকে ধাওয়া করেন। এতে হাতাহাতির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। সামনে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন। আমি প্রত্যাশিত পদ যাতে না পাই, এ জন্যই আমার ওপর হামলার দোষ চাপানো হচ্ছে।’
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ধুনট উপজেলায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সেখানে যাওয়ার পথে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাকবির ইসলামের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য জাহিদ হাসানের মোটরসাইকেলের। এতে দুই নেতার মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও কথা–কাটাকাটি হয়। ধুনট থেকে সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের সাতমাথায় ফেরার পর সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের নেতা আবদুর রউফসহ তাঁর সমর্থকেরা জাহিদ হাসানের পক্ষ নিয়ে তাকবির ইসলাম ও তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে আবদুর রউফের সমর্থকেরা তাকবির এবং তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা করলে সংঘর্ষ বাধে। তাকবিরকে ছুরিকাহত করা হয়।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, কথা-কাটাকাটি থেকে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।