বগুড়ায় মৃত চিকিৎসককে বদলি
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ থেকে একসঙ্গে ৫৪ চিকিৎসককে বদলি করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বদলির এই তালিকায় করোনায় মারা যাওয়া একজন চিকিৎসকের নামও আছে।
গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই ৫৪ চিকিৎসকের মধ্যে ৪৩ জনকে জেলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা বিশেষায়িত মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে, ৮ জনকে জয়পুরহাট সদর আধুনিক হাসপাতালে ও তিনজনকে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে। বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী ৫৪ চিকিৎসককে বদলির তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বদলির নির্দেশনা-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে চিকিৎসকদের নামের তালিকার ১৫ নম্বর ক্রমিকে আছেন চলতি বছরের জানুয়ারিতে করোনায় মারা যাওয়া চিকিৎসক জীবেশ কুমার প্রামাণিক। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর বাড়ি নাটোর জেলায়। ২২তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে তিনি স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন।
গত বছরের ১৬ নভেম্বর জীবেশ কুমার প্রামাণিকের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। ২১ নভেম্বর তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ওই দিনই তাঁকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি তিনি মারা যান।
বুধবারের মধ্যেই বদলি চিকিৎসকেরা এখানে যোগদান করবেন বলে আশা করছি। তালিকায় একজন মৃত চিকিৎসকের নাম থাকা ভুলবশত হয়েছে।
চিকিৎসক জীবেশ কুমার প্রামাণিকের করোনায় মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আলম জুয়েল। তবে বদলির তালিকায় তাঁর নাম থাকার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বদলির বিষয়ে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এটিএম নুরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ থেকে একসঙ্গে ৪৩ জনকে বিশেষায়িত এই হাসপাতালে বদলির আদেশের প্রজ্ঞাপন হাতে পেয়েছি। বুধবারের মধ্যেই বদলি চিকিৎসকেরা এখানে যোগদান করবেন বলে আশা করছি।’ তালিকায় একজন মৃত চিকিৎসকের নাম থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। এটা ভুলবশত হয়েছে।’
একসঙ্গে এত চিকিৎসককে বদলি করায় চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হবে কিনা জানার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদকে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে ২০০ শয্যার কোভিড ইউনিট ছাড়াও সার্জারি, গাইনি, অর্থোপেডিকস, শিশু, হৃদরোগ, কিডনি, মেডিসিনসহ নন-কোভিড বিভিন্ন বিভাগে কয়েক শ রোগী আছেন। এখানে কোভিড রোগী এখন ১৬১ জন। নন-কোভিডেও রোগী প্রায় হাজারের কাছাকাছি। এ ছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়। ৫৪ চিকিৎসককে বদলি করায় এখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।