গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল করেছেন।
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থী। পরে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করেন তাঁরা। ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘স্টপ রেপ, নো রেপ’–এর মতো বিভিন্ন স্লোগানে মিছিলটি নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে তাঁরা আন্দোলনের মঞ্চে এসে জড়ো হন। এ সময় দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ছয়জনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বিদেশি শিক্ষার্থীরা।
ফার্মেসি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সোমালিয়ান শিক্ষার্থী মোহাম্মদ অ্যাডাম বলেন, ‘আমার বোনেরা যদি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপদে চলাচল করতে না পারেন, তবে এর দায়ভার প্রশাসনের। আমরা চাই গোপালগঞ্জ ধর্ষণমুক্ত হোক, বাংলাদেশ ধর্ষণমুক্ত হোক, সর্বোপরি বিশ্ব ধর্ষণমুক্ত হোক। এ জন্য প্রশাসনকে অবশ্যই এই ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
ভেটেরিনারি সায়েন্সের নেপালি শিক্ষার্থী অসমিতা বলেন, ‘আমার বোনের ওপর নির্যাতন চালানোর প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নেমেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত না এই দলবদ্ধ ধর্ষণের বিচার হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
গত বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র ও একজন ছাত্রী গোপালগঞ্জ শহরের হেলিপ্যাড থেকে নবীনবাগের দিকে ফিরছিলেন। এ সময় চার থেকে পাঁচজন দুর্বৃত্ত তাঁদের গতি রোধ করে। দুর্বৃত্তরা ছাত্রকে মারধর করে ওই ছাত্রীকে পাশের নির্মাণাধীন জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজ ভবনে নিয়ে ধর্ষণ করে। রাতে ধর্ষণের খবর ক্যাম্পাসে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জ থানা ঘেরাও করেন।
এরপর গত বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে শিক্ষার্থীরা ঘোনাপাড়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা দিনভর ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে বিকেল ৫টার দিকে তাঁরা ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অবরোধ তুলে নেন। একপর্যায়ে গত শুক্রবার বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে চার দফা দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।