বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে আরও এক বাঘ ও এক সিংহ অসুস্থ

গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বিশ্রামরত সিংহ ও সিংহী
ফাইল ছবি

একের পর এক প্রাণীর মৃত্যুর পর গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আরও একটি বাঘ ও একটি সিংহ অসুস্থ বলে জানা গেছে। গতকাল রোববার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন পার্ক পরিদর্শনে এলে এই তথ্য জানা যায়।

সাফারি পার্কে সম্প্রতি মারা যাওয়া জেব্রা, বাঘ ও সিংহের থাকার জায়গা পরিদর্শন করেন মন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন প্রমুখ। পরিদর্শন শেষে সেখানকার তথ্যকেন্দ্রে সাংবাদিকদের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এসব কথা জানান।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, একটি বাঘ ও একটি সিংহ অসুস্থ। এগুলোর চিকিৎসা চলছে। পরিদর্শনের সময় সেখানে উপস্থিত প্রতিমন্ত্রী বাঘ ও সিংহকে দেওয়া খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মাংসের সঙ্গে হাঁড়ের পরিমাণ বেশি থাকে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি মারা যাওয়া প্রাণীগুলোর মরদেহের নমুনা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরীক্ষাগারেও পরীক্ষা করা হবে। প্রাণীগুলোর মৃত্যুর কারণ চিহ্নিত করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করেছে। এই কমিটি চলমান তদন্ত কমিটিকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করবে।

একটি বাঘ ও একটি সিংহের অসুস্থতা সম্পর্কে পার্কের প্রকল্প পরিচালক মোল্যা রেজাউল করিম আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, অসুস্থ প্রাণী দুটিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান অসুস্থ বাঘ ও সিংহ দুটির চিকিৎসা করে যাচ্ছেন।

গত ২ জানুয়ারি থেকে সাফারি পার্কে একের পর এক জেব্রা মরতে থাকে। সবশেষ ২৯ জানুয়ারি শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই দুটি জেব্রার মৃত্যু হয়। ১২ জানুয়ারি একটি বাঘ অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। খবরটি দীর্ঘদিন গোপন রেখেছিল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পার্কটিতে একটি সিংহীর মৃত্যু হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ দাবি করে, এটি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল। দেড় মাস ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর এটি মারা যায়।

প্রাণী মৃত্যুর এসব ঘটনায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পার্কের প্রকল্প কর্মকর্তা মো. জাহিদুল কবির, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান ও সেখানকার বন্য প্রাণী চিকিৎসা কর্মকর্তা হাতেম জুলকারনাইনকে।

এসব ঘটনায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ২৬ জানুয়ারি ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেব্রার পাল ছিল ৩১ সদস্যের। ১১টির মৃত্যুর পর পার্কে এখন আছে ২০টি জেব্রা। এ ছাড়া একটি বাঘের মৃত্যুর পর এখন তাদের পরিবারের সদস্য ৯। একটির মৃত্যুর পর সিংহ পরিবারের সদস্য সংখ্যা এখন ৯।