বদরগঞ্জে স্বামীর হাত-পা বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, আটক ১

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় এক পরিবারের সবাইকে অচেতন করে স্বামীর হাত-পা বেঁধে স্ত্রীকে (১৯) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটলেও আজ শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিলন হোসেন (২৪) নামের এক তরুণকে আজ রাত আটটার দিকে আটক করেছে পুলিশ।

ওই পরিবারের চারজনকে সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের মধ্যে তিনজনের জ্ঞান ফিরলেও রাত আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত একজনের জ্ঞান ফেরেনি। উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই গৃহবধূর স্বামী একজন দিনমজুর। তাঁর ২০ মাস বয়সী একটি সন্তান আছে। গতকাল রাতের খাবার খেয়ে নয়টার দিকে স্বামী-সন্তানসহ ঘুমাতে যান ওই গৃহবধূ। একই খাবার খেয়ে অন্য আরেকটি ঘুমিয়ে পড়েন তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি।

ওই গৃহবধূর স্বামীর অভিযোগ, রাতে ভাত খাওয়ার পরে স্ত্রীসহ তাঁর ও মা–বাবার মাথা কিছুটা ঢুলতে থাকে। পৃথক ঘরে বিছানায় গেলে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েন তাঁরা। গভীর রাতে জানালা দিয়ে তাঁর ঘরে তিনজন প্রবেশ করে। তখনো কিছুটা তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলেন তিনি। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাঁর (স্বামীর) হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে মুখে টেপ লাগিয়ে দেয়। এরপর দুর্বৃত্তরা তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। ঘরের ভেতরে গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাঁকেসহ স্ত্রী ও বাবা-মাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এক প্রতিবেশী বলেন, ‘ঘরের মধ্যে গোঙানির শব্দ শুনে ওই বাড়িতে যাই। গিয়ে দেখি, গৃহবধূ খাটের ওপরে আছেন। স্বামীর হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা। স্বামী ও স্ত্রী তখনো ঢুলাঢুলি করছিলেন। গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়িও তখন ঘরে অচেতন হয়ে পড়েছিলেন।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধূর শাশুড়ি সুস্থ হয়ে উঠলেও শ্বশুরের জ্ঞান এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফেরেনি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হাবিবুর রহমান বলেন, ওই পরিবারের সদস্যরা বিষজাতীয় কিছু খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ওই গৃহবধূকে তাঁর বাবা উন্নত চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে গেছেন।

ওই গৃহবধূকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তাঁর বাবা। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মেয়ের শারীরিক অবস্থা ভালো না। আমার মেয়ের যারা ক্ষতি করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’

বদরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুর আলম সিদ্দিক বলেন, ঘটনাটি সন্ধ্যার কিছু আগে তাঁরা জানতে পারেন। তখন দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিলন হোসেন নামের এক তরুণকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্য ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ মাঠে আছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ওই গৃহবধূকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা গৃহবধূ নিজেই পুলিশকে জানিয়েছেন।