ব্যাটারি, ডিজেল ও সিএনজিচালিত তিন চাকার যানবাহনের চালকেরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন হিরণ পয়েন্ট এলাকায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এতে বিভাগীয় শহরের সঙ্গে কুয়াকাটাসহ দক্ষিণের জেলা ও উপজেলাগুলোর যান চলাচল এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকে।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে হিরণ পয়েন্ট এলাকায় বাসমালিক সমিতির ভাড়াটে মাস্তানেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে পাহারা বসিয়ে তিন চাকার যানবাহন চলাচলে বাধা দিয়ে এবং এর চালক ও যাত্রীদের লাঞ্ছিত করে আসছেন। এ ‘অত্যাচার’ বন্ধ করতে হবে।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এ অবরোধ শুরু করেন তিন চাকার যানবাহনের চালকেরা। এ সময় তিন চাকার যান রেখে মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন তাঁরা। ফলে সড়কের দুই পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা হিরণ পয়েন্টে বাসমালিক সমিতির অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ ও শ্রমিকদের ওপর হয়রানি-নির্যাতন বন্ধের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে তাঁদের দাবির প্রতি সংহতি জানাতে হিরণ পয়েন্টে উপস্থিত হন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলার সদস্যসচিব মনীষা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, বাসমালিক সমিতি হিরণ পয়েন্ট এলাকায় অবৈধ স্ট্যান্ড বানিয়ে তাদের ভাড়াটে মাস্তান দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিন চাকার যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। কম দূরত্বের পথে কোনো যাত্রী তিন চাকার যানে যেতে চাইলেও তাঁদের বাধা দিচ্ছে, লাঞ্ছিত করছে। এমনকি প্রায়ই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাদের হাতে লাঞ্ছনা ও মারধরের শিকার হচ্ছেন।
এ সময় হিরণ পয়েন্ট এলাকা থেকে অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ এবং মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলের জন্য সার্ভিস লেন চালুর দাবি জানান মনীষা চক্রবর্তী।
পরে বেলা একটার দিকে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান, সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মেহেদী ও স্থানীয় ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন অবরোধস্থলে উপস্থিত হন এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবং বাসদ নেতা মনীষা চক্রবর্তীর অনুরোধে বেলা দেড়টার দিকে শ্রমিকেরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন এবং মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ উল্লেখ করে বরিশাল-পটুয়াখালী বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা বাকেরগঞ্জ পর্যন্ত এই যানবাহন চালাতে চান। আমরা বলেছি, এসব কম গতির যানের কারণে দ্রুতগামী যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এমনকি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এরপরও আজ তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।’
মূলত মনীষা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে তাঁরা একটি সুন্দর-স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্ন ঘটানোর জন্যই এসব করছেন মন্তব্য করে কাওসার হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে বলেছি, মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলের যদি সরকারের অনুমতি থাকে, তাহলে আমাদের আপত্তি নেই।’