রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্ধিত অংশে চার দিন থেকে পানি সরবরাহ নেই। ফলে ছয়টি ওয়ার্ডে রোগী ও তাঁদের স্বজনদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুটি পাম্প নষ্ট হওয়ায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, পাঁচতলা ভবনের এ অংশে অর্থোপেডিক (পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড), গ্যাস্ট্রোলজি, ইউরোলজি, মেডিসিন (মহিলা ও পুরুষ) ওয়ার্ড অবস্থিত। সেই সঙ্গে নিচতলায় অর্থোপেডিক এবং চক্ষু, নাক–কান–গলা বিভাগের বহির্বিভাগ রয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের পুরোনো ভবনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানি সরবরাহের জন্য একাধিক পানির পাম্প রয়েছে। নতুন ভবনের বর্ধিত অংশে দুটি পানির পাম্প দিয়ে ছয়টি ওয়ার্ড ও তিনটি বহির্বিভাগে বাথরুমসহ সর্বত্র পানি সরবরাহ হয়ে থাকে। কিন্তু ২০ ও ২১ মার্চ পরপর দুদিন পাম্প দুটি বিকল হয়ে পড়ে। ফলে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালের বর্ধিত ভবনে গেলে রোগী ও স্বজনেরা তাঁদের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন। মেডিসিন ৩০ নম্বর মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন একজন রোগীর স্বজন রংপুর নগরের সাতগাড়া মিস্ত্রিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশা মণি বাইরে থেকে পানি নিয়ে এসেছেন। তাঁর এক হাতে পানির বালতি ও আরেক হাতে খাবার পানির বোতল। তিনি বলেন, ‘এত বড় হাসপাতালে যদি পানি সাপ্লাই না থাকে, তাহলে কী যে কষ্ট হয়, তা আর কী করে বোঝাই।’

এত বড় হাসপাতালে যদি পানি সাপ্লাই না থাকে, তাহলে কী যে কষ্ট হয়, তা আর কী করে বোঝাই।
আশা মণি, রোগীর স্বজন

গাইবান্ধার এক রোগীর স্বজন রেহেনা বেগম বলেন, খাবার পানি বাইরে থেকে এনে চললেও বাথরুম ব্যবহারে পানির কষ্ট বড় সমস্যা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নার্স বলেন, পানি না থাকলে রোগীদের সমস্যার শেষ নেই। তাঁরা অন্য ভবনের শৌচাগারে যাচ্ছেন। কিন্তু রোগী ও তাঁদের সঙ্গে আসা লোকজনের বড় সমস্যা হয়েছে। এখানে তাঁরাই বা কী করবেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের ব্যাপার।

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মাহমুদ হাসান বলেন, পানির পাম্পসহ যাবতীয় কাজের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের। শুধু হাসপাতালের এসব কাজ দেখাশোনার জন্য হাসপাতাল ক্যাম্পাসে গণপূর্ত অফিসের মেডিকেল শাখা কার্যালয় রয়েছে। তাঁদের কাছে চার দিন ধরে ধরনা দিতে দিতে হয়রান হয়ে পড়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গিয়েও তাগাদা দিয়ে এসেছেন। কিন্তু হবে হবে বলে চার দিন পার হয়ে গেল। এখনো যন্ত্র মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে। কেননা তারাই এসব বিষয়ে দেখাশোনা রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।

হাসপাতাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত গণপূর্ত বিভাগ রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাজিয়া সুলতানা বলেন, দুটি পাম্প নষ্ট হয়েছে। তাঁরা সেগুলো মেরামতের চেষ্টা করছেন।