বাউফলে ইউপি নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করায় হামলার অভিযোগ

নৌকার পক্ষে কাজ করায় পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় অলিপুরা বাজার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে চাঁদা দাবি ও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম এ টি এম কাওছার হোসেন। তিনি বাউফল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দশমিনা ডা. ডলি আকবর মহিলা কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার সকালে সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছে বাউফল সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। সকাল ১০টার দিকে বাউফল-নওমালা সড়কের অলিপুরা বাজারে সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রব চৌকিদারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সূর্য্যমনি ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে বাচ্চু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য মো. হারুন অর রশিদ খান, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মামুন খান প্রমুখ।

পরে বেলা ১১টার দিকে অলিপুরা বাজারে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাউফল সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান ওরফে লিটন মোল্লা। তিনি বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে কাওছার হোসেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জসিম উদ্দিনের পক্ষে প্রচারণা চালান। এতে ক্ষুব্ধ হন জামায়াত-সমর্থিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম। ওই নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন জাহিদুল। গত শনিবার সকালে কাওছারকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে চাঁদা দাবি করেন চেয়ারম্যানের লোকজন। এর ব্যত্যয় হলে এলাকা ছাড়তে হবে বলে হুমকি দেন তাঁরা। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় ওই দিন বেলা সোয়া ১১টার দিকে অলিপুরা বাজারে চেয়ারম্যান জাহিদুলের উপস্থিতিতে তাঁর লোকজন কাওছারের ওপর হামলা করে আহত করেন। এ ঘটনায় কাওছার বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এর আগে ছাত্রলীগকর্মী অর্জুন শীল ও সোহেলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকাছাড়া করেন জাহিদুল। এখন পর্যন্ত তাঁরা এলাকায় আসতে পারেননি।

পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলার ঘটনায় আয়োজিত প্রতিবাদ সভা। আজ সকালে বাউফল-নওমালা সড়কের অলিপুরা বাজার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত তিনি (জাহিদুল) চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নেননি। এর আগেই স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক হয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নেতা-কর্মীদের মারধর ও এলাকাছাড়া করার মিশনে নেমেছেন। এ ছাড়া একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে ঢুকে তাঁকে (জাহিদুল) সভাপতি বানানোর জন্য হুমকি দিয়েছেন। এটা ভালো ইঙ্গিত বলে মনে হচ্ছে না। এভাবে চললে একদিন তাঁকে জনরোষে পড়ে পালাতে হবে।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, ওই দিন তাঁকে (জাহিদুল) কটাক্ষ করায় তাঁর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কাওছারের কথা–কাটাকাটি হয়। তিনি পরিস্থিতি শান্ত করেন। তাঁর (জাহিদুল) ও নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সত্য নয়। তিনি বা তাঁর কোনো নেতা-কর্মী কাউকে হুমকি দেননি এবং তিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন বলেও দাবি করেন।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, এ–সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।