বাউফলে সাংসদের সফর বাতিল চেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লিখিত আবেদন
পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনের সাংসদ আ স ম ফিরোজের সরকারি সফর বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব ও পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন নওমালা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শাহজাদা হাওলাদার। গতকাল সোমবার তিনি ওই লিখিত আবেদন করেছেন।
লিখিত অভিযোগে শাহজাদা হাওলাদার উল্লেখ করেছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নিজের ভোটাধিকার না থাকলে নির্বাচন কার্যক্রম চলাকালে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অথবা সরকারের কোনো কর্মকর্তাগণ তাঁর নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করতে পারবেন না। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংসদ আসম ফিরোজ এ উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের ভোটার। ওই ইউনিয়নে প্রথম ধাপেই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শাহজাদা হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আ স ম ফিরোজের সরকারি সফরসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে দেখানো হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নিয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা ও উপজেলার প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে বৈঠক, সার ও বীজ বিতরণ, স্থানীয়ভাবে দলীয় ও সামাজিক কার্যক্রমে যোগদান। তাঁর এ সফরসূচি দেখলে যে কেউ বুঝতে পারবে তিনি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী কামাল হোসেন বিশ্বাসের পক্ষে প্রচারণা ও প্রভাব বিস্তার করার জন্য বাউফলে অবস্থান করছেন। আর তিনি সেটাই করছেন।
শাহজাদা হাওলাদারের দাবি, সাংসদ বাউফলে অবস্থান করার পর থেকে সাংসদের বহিরাগত নেতা-কর্মীরা তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ঢুকে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করছেন। তাঁর ছোট ভাই মো. আরিফকে (৩২) কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাঁর ভাইয়ের বাঁ চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আ স ম ফিরোজ এলাকায় থাকলে কোনোভাবেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।
এ ছাড়াও শাহজাদা ভোটের দিন তাঁর ইউনিয়নের নয়টি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। পুলিশের পক্ষপাতের বিষয়েও তিনি জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আ স ম ফিরোজের সরকারি সফরসূচি অনুযায়ী তিনি ৭ থেকে ১৩ নভেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত বাউফলে অবস্থান করবেন। এর মধ্যে ১১ নভেম্বর বাউফলের নওমালা ও সূর্য্যমণি ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আ স ম ফিরোজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। ধন্যবাদ।’ এই কথা বলেই তিনি কল কেটে দেন।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা হাওলাদারের একটি লিখিত আবেদন পাওয়া গেছে। তিনি যেহেতু নির্বাচন কমিশনেও লিখিত দিয়েছেন, তাই বিষয়টি নির্বাচন কমিশন থেকেই খতিয়ে দেখা হবে। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।