বাকেরগঞ্জে পূর্বশত্রুতার জেরে দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম, একজনের মৃত্যু

বরিশাল জেলার মানচিত্র

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় পূর্বশত্রুতার জেরে দুই ভাইকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁদের মধ্যে রনি মোল্লা (২৫) নামের একজন মারা গেছেন। অন্যজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ইছাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রনি মোল্লা (২৫) ও আহত শহিদুল ইসলাম ওরফে সোহেল মোল্লা (২২) ইছাপুর গ্রামের ইয়াসিন মোল্লার ছেলে।

পুলিশ ও হতাহত ব্যক্তিদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগী সোহেল সন্যামত নামের দুজনের নেতৃত্বে সাত-আটজন ব্যক্তি রনি মোল্লাদের বাড়িতে আসেন। এ সময় রনিকে ডাক দিলে তাঁরা দুই ভাই বাড়ির বাইরে আসেন। তখন তাঁদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান। রনি ও শহিদুলকে উদ্ধার করে স্পিডবোটে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে তিনটার দিকে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর ভাই শহিদুলকে প্রথমে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে ঢাকায় পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায়, পূর্বশত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। তখন তাঁর ডান হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ২০১২ সালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দীন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি জহিরুল। ওই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ২০২০ সালে জহিরুলের ওপর একই এলাকার গোলাম সরোয়ার ওরফে সবুজের নেতৃত্বে হামলা হয়। অভিযোগ আছে, হামলায় শহিদুল ও নিহত রনি মোল্লা অংশ নিয়েছিলেন। ওই হামলার জেরে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় সকালে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাকেরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন মিলনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের চিহ্নিত করা গেছে। পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তাঁরা ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেছেন। আশা করছেন, দ্রুত তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন। ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

এদিকে ঘটনার পরপরই জহিরুল ইসলামসহ তাঁর সহযোগীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জহিরুল ফরিদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হলেও দলীয় প্রভাবে নানা অপকর্ম করছেন তিনি।

ফরিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার চাপরাশি প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দীন হত্যাকাণ্ডের পর জহিরুলকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর পর থেকে দলের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।