খুলনার পাইকগাছা
বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত, আ.লীগের অপেক্ষা
খুলনার পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের জন্য সোমবার আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার কথা। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০ অক্টোবর।
খুলনার পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২০ অক্টোবর। এরই মধ্যে তোড়জোড় শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে সাতজন দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন। সোমবার নৌকার প্রার্থিতা চূড়ান্ত করবে দলটি। অন্যদিকে বিএনপি চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।
নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ২৩ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত কেউ মনোনয়ন সংগ্রহ বা জমা দেননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় ঢাকায় অবস্থান করছেন। কে মনোনয়ন পাবেন, সে বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা চলছে।
উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য সাত প্রার্থী দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। ওই সাতজন হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল হাসান, সহসভাপতি সমীরণ কুমার সাধু, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা কৃষ্ণপদ মণ্ডল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ আবুল কালাম আজাদ, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা ফরহাদ উজ্জামান ও সদ্য প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলীর ছেলে গাজী মেহেদী হাসান।
পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মনোনয়নপ্রত্যাশী আনোয়ার ইকবাল বলেন, ‘দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে আছি কিন্তু দলীয়ভাবে কখনো কিছু চাইনি। এবারই প্রথম মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। এখন দলীয় সভানেত্রী কাকে মনোনয়ন দেন, সেটিই দেখার বিষয়।’
পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মনোনয়নপ্রত্যাশী শেখ কামরুল হাসান বলেন, যাঁরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন, তাঁরা তা জমাও দিয়েছেন। এখন কে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন, সে অপেক্ষায় আছেন তাঁরা।
জেলা থেকে প্রার্থিতার জন্য কোনো সুপারিশ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ। তিনি বলেন, যাঁরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাঁরা সবাই যোগ্য। এখন দল থেকে যাঁকে নৌকার প্রার্থিতা দেওয়া হবে, সবাই তাঁর জন্য কাজ করবেন।
অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির নেতারা বৈঠক করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুল মজিদকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি নির্বাচনের জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন। এর আগে কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অভিজ্ঞতা নেই তাঁর।
আবদুল মজিদ জানান, শনিবারের বৈঠক থেকে উপজেলা পর্যায়ের সব নেতারা তাঁকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। জেলার নেতারাও তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন। এখন মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য তিনি কাগজপত্র প্রস্তুত করছেন।
তবে আগে প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির নেতারা। জেলা বিএনপির সভাপতি এস এম শফিকুল আলম বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে নির্বাচনের যে হালচাল দেখা যাচ্ছে, তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তিনি দাবি করেন, নির্বাচনের এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগে যত নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সব কটিতেই বিএনপির প্রার্থীদের জয়জয়কার ছিল। গত নির্বাচনে এই উপজেলায় বিএনপি প্রার্থী দেয়নি। তবে তার আগের নির্বাচনে সেখানে বিএনপির প্রার্থীই জয়ী হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে যদি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে এবারও বিএনপির প্রার্থীই জয়ী হবেন।
এদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মাহজারুল ইসলাম বলেন, যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৩ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার শেষ দিন। হাতে এখনো দুই দিন সময় আছে, তাই আশা করা যায়, ওই সময়ের মধ্যেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেবেন।