বিচারপতি পরিচয় দিয়ে পুলিশ প্রটোকল নেওয়া সেই ব্যক্তি কারাগারে

মো. আরিফ হোসেন ওরফে বিপ্লব প্রধান
ছবি: সংগৃহীত

নিজেকে উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি পরিচয় দিয়ে পুলিশ প্রটোকল নেওয়া মো. আরিফ হোসেন ওরফে বিপ্লব প্রধানের (৪০) ঠাঁই হয়েছে কারাগারে। আজ শনিবার তাঁকে চাঁদপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওঠানো হলে বিচারক তাঁকে পুলিশকে হয়রানি ও প্রতারণার মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আরিফ হোসেন পেশায় একজন ওয়ার্কশপ দোকানদার। ঢাকায় তাঁর একটি দোকান আছে। তিনি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার দিঘলদী গ্রামের মৃত মাহবুব প্রধানের ছেলে। গতকাল জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে নিজেকে ‘বিচারপতি বিপ্লব প্রামাণিক’ পরিচয় দিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে পুলিশি প্রটোকল নিয়ে বাড়িতে যান। পরে সন্দেহ হলে পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

আরও পড়ুন

চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় প্রথম আলোকে বলেন, আরিফ হোসেন ঢাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে চাঁদপুরে আসার পথে কুমিল্লায় যানজটে পড়েন। যানজট থেকে মুক্তি পেতে তিনি পুলিশি সহায়তার জন্য জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দেন। বিষয়টি যাচাই না করে পুলিশ নিয়ন্ত্রণকক্ষে জানালে তাঁরা চাঁদপুর পুলিশ নিয়ন্ত্রণকক্ষকে বিষয়টি জানান। এতে বলা হয়, ঢাকা থেকে ‘বিপ্লব প্রামাণিক’ নামের একজন বিচারপতি কুমিল্লা হয়ে চাঁদপুরে ঢুকবেন। তাঁর দুজন গানম্যানসহ প্রটোকল প্রয়োজন। বিষয়টি জানার পর চাঁদপুরের ডিআইও-১ মো. মনিরুল ইসলাম ওই ভুয়া বিচারপতির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে প্রটোকলের ব্যবস্থা করেন। সেই সঙ্গে বিষয়টি পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, মতলব দক্ষিণ ও উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জানান।

সুদীপ্ত রায় আরও বলেন, ‘পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি সন্দেহ হলে তিনি আমাকে এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলেন। মতলব দক্ষিণ থানার বারঠিলা এলাকায় বিচারপতি পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির গাড়ি থামলে কোনো ধরনের পতাকা ও নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়। তখন পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাঁকে আটক করে মতলব দক্ষিণ থানায় নিয়ে আসা হয়।’

পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ বলেন, তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, বিচারপতি পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এর আগেও মতলব দক্ষিণ থানায় দুটি মামলা আছে। তাঁদের ধারণা, নিজের এলাকায় সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই প্রতারণার কৌশল নেন তিনি। ধরা পড়ার পর তিনি পুলিশের কাছে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন। প্রতারণা ও পুলিশকে হয়রানির কারণে তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি প্রতারণার মামলা করা হয়েছে। ওই ব্যক্তিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।