বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় ব্যক্তিমালিকানার জমি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে দখলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, স্কুলড্রেস পরিহিত শিক্ষার্থীরা সারিবদ্ধ লাইনে দাঁড়িয়ে এক স্থান থেকে হাতে হাতে ইট উঠিয়ে নিয়ে দখলকৃত জায়গায় বসিয়ে রাস্তা বানাচ্ছেন।
গতকাল সোমবার উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের এল কে এইচ উপকূলীয় উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
ভুক্তভোগী জমির মালিক রাসেল হোসেন স্থানীয় মোল্লার হাটের টেলিকম ব্যবসায়ী। তিনি অভিযোগ করেন, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনির হোসেন মোল্লার নির্দেশে ছাত্ররা এ দখল করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামে বিদ্যালয়টির পাশে রাসেলদের ৩৯ শতাংশ জমি রয়েছে। শুরুতে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার রাস্তা না থাকায় রাসেলদের জমি ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। এখন বিদ্যালয়ের পাশ দিয়েই সরকারিভাবে পাকা রাস্তা হয়েছে। এতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পুরোনো রাস্তাটি বন্ধ করা হয়। হঠাৎ গত সোমবার প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ও সভাপতি মনির মোল্লা ছাত্রদের নিয়ে রাসেলের জমির সুপারিগাছ কেটে ফেলেন। সয়াবিনসহ বিভিন্ন ফসল কেটে দেন। পুরোনো রাস্তাটি পুনরায় ইট দিয়ে তৈরির চেষ্টা করা হয়। এতে রাসেলসহ তাঁর স্বজনেরা বাধা দিলে হাতাহাতি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শুরুতে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার রাস্তা না থাকায় রাসেলদের জমি ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। এখন বিদ্যালয়ের পাশ দিয়েই সরকারিভাবে পাকা রাস্তা হয়েছে। এতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পুরোনো রাস্তাটি বন্ধ করা হয়।
মো. রাসেল বলেন, ‘স্কুলের পাশেই সরকারি রাস্তা রয়েছে। কিন্তু শিক্ষক মিজান ও আওয়ামী লীগের নেতা মনির মোল্লা আমার জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন। আমার জমির সুপারিগাছসহ বিভিন্ন ফসল কেটে ফেলেছেন। জমিতে নিরাপত্তা দেয়ালের জন্য ইট এনেছি। সেই ইট মিজান ও মনির মোল্লা ছাত্রদের দিয়ে আমার জমিতে রাস্তা বানিয়েছে।’
তবে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্কুলের শুরু থেকেই রাস্তাটি ছিল। রাসেলসহ তাঁর লোকজন সেখান থেকে ইট সরিয়ে নিয়েছেন। এখন তাঁরা জোরপূর্বক সেখানে ইট দিয়ে ঘর নির্মাণ করে দখলের চেষ্টা করছিলেন। আমি ছাত্রদের দিয়ে ইট নিয়ে আবার রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছি।’
শিক্ষার্থীদের দিয়ে অন্যের জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনির হোসেন মোল্লা বলেন, ‘অধিকার আদায়ের জন্য অতীতে সব আন্দোলন ছাত্ররাই করেছেন। বিদ্যালয়ের জমি ছাত্ররাই এখন দখল করে নিয়েছে।’
হাজীমারা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) ইউসুফ মিয়া বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। স্কুলের শিক্ষক-ছাত্রদের ও জমির মালিককে তাঁরা বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল হক বলেন, ‘জমি দখলের অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। জমি দখলের কাজে ছাত্রদের ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেব।’