বিদ্যুতে ঝলসে আহত লজ্জাবতী বানর
বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ঝলসে গেছে ডান হাত ও ডান পা। এ রকম আহত অবস্থায় একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন থেকে বানরটিকে উদ্ধার করা হয়। বানরটিকে শ্রীমঙ্গলের বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শ্রীমঙ্গলের পূর্ব আশিদ্রোন এলাকায় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে লজ্জাবতী বানরটি আহত হয়। স্থানীয় লোকজন রাতেই বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ ঘটনা জানান। রাত বেশি হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে বানরটি উদ্ধার করা যায়নি। রাতে আহত বানরটিকে পূর্ব আশিদ্রোনের বাসিন্দা মতিউর রহমানের বাড়িতে রাখা হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের লোকজন সেখান থেকে বানরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। বানরটির ডান হাত ঝলসে কবজি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ডান পা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বানরটির ডান হাত ঝলসে কবজি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ডান পা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। প্রাণী চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁর পরামর্শমতো বাকি চিকিৎসা দেওয়া হবে। তবে মনে হচ্ছে, একে বাঁচানো খুবই কঠিন হবে। খুবই নেতিয়ে পড়েছে। শরীর তুলতে পারছে না।’ তিনি বলেন, লজ্জাবতী বানর বিপন্ন প্রাণী। প্রায়ই এ রকম বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা পড়ছে। গত কয়েক মাসে তিন-চারটি লজ্জাবতী বানর এভাবে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লজ্জাবতী বানর লাজুক বানর হিসেবেও পরিচিত। এদের বেঙ্গল স্লো লরিস হিসেবেও ডাকা হয়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকার নয়টি ভাগের মধ্যে লজ্জাবতী বানরকে ‘বিপন্ন’ (endangered) প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশে এরা মূলত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। এটি বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত প্রাণী। বানরজাতীয় প্রাণীর মধ্যে এটি দেশের ক্ষুদ্রতম।