বিয়েবাড়িতে বর ও কনেপক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় একটি বিয়েবাড়িতে বরযাত্রী খেতে বসার পর খাবারসংকট ও কনের বাবার শরীরে খাবারভর্তি ‘অপরিষ্কার প্লেট’ ছুড়ে মারার ঘটনায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের পূর্ব হরিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্ব হরিপুর গ্রামের এক ব্যক্তির মেয়ের সঙ্গে মাহমুদপুর গ্রামের আতাউর রহমান নামের এক ব্যক্তির ছেলের বিয়ের দিন ধার্য হয় শুক্রবার। ওই দুই তরুণ-তরুণীর প্রেম ছিল, যা পারিবারিকভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় গড়ায়। শুক্রবার দুপুরের পর বরপক্ষের লোকজন কনেবাড়িতে যান।

দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কনেবাড়িতে যাওয়ার পর বেলা ৩টার দিকে বরপক্ষের লোকজনকে খাবার খেতে দেওয়া হয়। এ সময় খাবারসংকট দেখা দেয়। এরপরই শুরু হয় দুই পক্ষের তর্কবিতর্ক। এর মধ্যেই খেতে বসা বরের বাবা আতাউর রহমান তাঁর খাবারের প্লেট ‘অপরিষ্কার’ থাকার অভিযোগ তোলেন। তিনি কনের বাবাকে সেখানে ডেকে আনেন এবং খাবারভর্তি অপরিষ্কার প্লেট ছুড়ে মারেন তাঁর শরীরে। এরপরই হাতাহাতি থেকে শুরু হয় মারামারি। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

বর-কনেপক্ষের লোকজন হাতের সামনে যা পেয়েছেন, তা নিয়েই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনও এতে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল ইসলাম দল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে বিয়ে ছাড়াই বরকে নিয়ে ফিরে যান বরপক্ষের লোকজন।

কনের চাচা জানান, ১০০ জন বরযাত্রী নিয়ে বরপক্ষের লোকজন আসবেন, এমনটাই কথা ছিল। কিন্তু তাঁরা এসেছেন প্রায় ১৫০ জন। এতে তাৎক্ষণিকভাবে খাবারের একটু সংকট তৈরি হয়। নতুন করে খাবার রান্নার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। কিন্তু বরের বাবা ‘অপরিষ্কার প্লেট’–এর অভিযোগে কনের বাবার শরীরে খাবারভর্তি প্লেট ছুড়ে মারলে বিষয়টি তাঁদের সম্মানে লাগে। এরপরই এ ঘটনা ঘটে।

তবে বরপক্ষের লোকজনের ভাষ্য, বিয়েবাড়িতে তাঁদের লোকজনকে খেতে বসিয়ে অসম্মান করা হয়েছে। বরযাত্রী সংখ্যায় বেশি গিয়েছে, এই অভিযোগ সত্য নয়। ১০০ জনেরও কম লোক নিয়ে তাঁরা কনেবাড়িতে গিয়েছিলেন। কনেপক্ষের কাছে অসম্মানিত হওয়ায় তাঁরা বিয়ে না করিয়ে বর নিয়ে চলে আসেন।

এসআই রাকিবুল ইসলাম বলেন, বরপক্ষকে খেতে বসানোর পর খাবার সংকট তৈরি হওয়া ও ‘অপরিষ্কার প্লেট’–এর দোহাই দিয়ে কনের বাবার শরীরে খাবারভর্তি প্লেট ছুড়ে মারার ঘটনায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে কোনো পক্ষই এখনো থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দেননি।