বেলকুচি ছাত্রলীগের ৭ কর্মীকে কুপিয়ে, পিটিয়ে জখম
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভায় মেয়র ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদুল হকের অনুসারীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সাত কর্মীকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার দুপুরের দিকে বেলকুচি মডেল কলেজে এ হামলার ঘটনা ঘটে। সাজ্জাদুল হক গত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে হামলার প্রতিবাদ ও হুকুমদাতাকে আইনের আওতায় আনার দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ।
হামলায় বেলকুচি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আকতার হামিদের ছোট ভাই তরিকুল ইসলাম (১৯), ছাত্রলীগ কর্মী ছাব্বির হোসেন (১৮) ও তৌহিদ (১৮) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্য চার কর্মী হলেন ছাব্বির (১৮), নাঈম (১৯), শাফি (১৮) ও ইমন (১৮)।
উপজেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে সহপাঠী কয়েকজন বন্ধুসহ ছাত্রলীগ কর্মী তরিকুল ইসলাম পৌর শহরের বেলকুচি মডেল কলেজে ভর্তি ও উপবৃত্তির ফরম পূরণের জন্য যান। সেখানে তাঁদের দেখে সাজ্জাদুল হকের অনুসারী আরেফিন রতনের নেতৃত্বে কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ সময় তরিকুল ইসলামসহ সাতজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়।
গুরুতর আহত তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কলেজে প্রবেশ করার পরপরই বেলকুচি পৌর মেয়রের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য রতনের নেতৃত্বে কিছু লোক ছাত্রলীগকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তাঁরা কয়েকজন মিলে আমাদের ওপর রামদা, রড ও চাপাতি দিয়ে হামলা করে। সে সময় “মডেল কলেজে সাজ্জাদুল হক ভাইয়ের অনুমতি ছাড়া ছাত্রলীগের কেউ ভর্তি কিংবা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে পারবেন না” বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে বেলকুচি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আকতার হামিদ বলেন, ‘বেধড়ক মারপিট ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়েছে তারা। আমার ছোট ভাইয়ের মাথায় কোপানো হয়েছে। গুরুতর আহত তিন কর্মীকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
অভিযুক্ত হামলাকারী আরেফিন রতনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পৌর মেয়র সাজ্জাদুক হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গত ১৭ বছর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। বর্তমানে উপজেলা ছাত্রলীগের সব নেতা-কর্মী আমার হাতেই গড়া। তবে আজকের হামলার বিষয়ে আমি অবগত নই।’
বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিন হাসান ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, হামলার ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে জানান, ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার ঘটনা শুনেছেন। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।