বেহাল সড়কে ভোগান্তি

কার্যাদেশ দেওয়ার সাড়ে সাত মাস পরও সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সড়কের গর্তে পড়ে ট্রাক উল্টে পড়েছে। গত সোমবার সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

সাতক্ষীরার আলীপুর-ভোমরা সড়ক সংস্কারের কার্যাদেশ দেওয়ার সাড়ে সাত মাস পরও কাজ শুরু হয়নি। কার্যাদেশ অনুযায়ী আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা।

এদিকে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ভোমরা বন্দর এলাকার সাড়ে তিন কিলোমিটারে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে পণ্যবাহী যান চলাচলে। মাঝেমধ্যে ট্রাক উল্টে যাওয়ারও ঘটনা ঘটছে।

আলীপুর থেকে ভোমরা বন্দর পর্যন্ত দূরত্ব সাড়ে ৯ কিলোমিটার। সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের নভেম্বরে সড়ক সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করা হয়। আলীপুর থেকে ৬ কিলোমিটার পিচের রাস্তার জন্য ব্যয় ধরা হয় ২১ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা এবং ভোমরা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়কের জন্য ব্যয় ধরা হয় ২২ কোটি ৪৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। দুই ধাপেরই কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাইটেক কনস্ট্রাকশন। কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর, কাজ শেষ হওয়ার কথা আগামী ২০ সেপ্টেম্বর। তবে এখন পর্যন্ত কাজই শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এ সম্পর্কে হাইটেক কনস্ট্রাকশনের প্রকৌশলী কাজী কাশেদুল হক জানান, করোনা, বিধিনিষেধ ও ভারত থেকে পাথর আনতে না পারায় সড়কের সাড়ে ছয় কিলোমিটারের কাজ যথাসময়ে শুরু করা যায়নি। সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। আর সড়কের তিন কিলোমিটার অংশ ঢালাই হবে, এ জন্য নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন নকশা না পাওয়া পর্যন্ত কাজ শুরু করতে পারছেন না তাঁরা।

সাতক্ষীরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আসে ভারত থেকে। বাংলাদেশ থেকেও পণ্যবাহী গাড়ি যায়। সড়ক দিয়ে দিনে ৭০০-৮০০ ট্রাকসহ অন্যান্য গাড়ি চলাচল করে। ভোমরা বন্দরের জিরো পয়েন্ট থেকে তিন কিলোমিটার এতই খারাপ যে ট্রাক তো দূরের কথা, মানুষও চলাচল করতে পারে না। সড়কের ছাল–চামড়া উঠে খোয়া বেরিয়ে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বারবার বলার পরও তারা কর্ণপাত করছে না। ইতিমধ্যে কয়েকবার জরুরি ভিত্তিতে ইট ও পাথর ফেলে সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই আগের অবস্থার সৃষ্টি হয়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এই সড়কে নিয়মিত পণ্য আনা-নেওয়া করেন ট্রাকচালক চান্দু মিয়া। তিনি বলেন, ভোমরা বন্দর থেকে ৮-৯ কিলোমিটার সড়ক বেশি খারাপ। প্রায়ই গাড়ি উল্টে যায়, এতে পণ্যেরও ক্ষতি হয়। দুর্ঘটনায় অনেক সময় পথচারী, ট্রাকচালক ও তাঁর সহকারী আহত হন বলেও জানান তিনি।

সাতক্ষীরা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজামউদ্দীন আহমেদ বলেন, ভোমরা বন্দর থেকে তিন কিলোমিটার সড়ক ঢালাই হবে। নকশা পরিবর্তনের বিষয়টি সংস্থার প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে রয়েছে। নকশা পরিবর্তন হয়ে না এলে কাজ শুরু করতে পারছেন না ঠিকাদার। বাকি ছয় কিলোমিটার সড়ক হবে পিচের। আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।