বৈরী আবহাওয়ায় দৌলতদিয়ায় রাতে যানবাহন পারাপার ব্যাহত, দুর্ভোগ
ঘাটস্বল্পতার কারণে ফেরি ঠিকমতো ঘাটে ভিড়তে না পারায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। এর মধ্যে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বৈরী আবহাওয়ার কারণে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হওয়ায় ঘাট এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।
এতে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটারজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিক থেকে ঝোড়ো বৃষ্টির কারণে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এতে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। গতকাল রাতে সরেজমিনে দেখা যায়, পাটুরিয়া প্রান্তে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুই কিলোমিটারজুড়ে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী গাড়ির লম্বা সারি তৈরি হয়েছে। এ সময় ফেরিতে ওঠার জন্য প্রায় ৩০০ যানবাহন অপেক্ষা করছিল।
কুষ্টিয়া থেকে আসা বাসযাত্রী রাশেদ রহমান জানান, ঘাটে যানজট এড়াতে তাঁরা সন্ধ্যার আগেই দৌলতদিয়া আসেন। কিন্তু ঘাটে লঞ্চে ওঠার আগমুহূর্তে আবহাওয়া খারাপ দেখে তিনি লঞ্চের পরিবর্তে ফেরিতে ওঠার সিদ্ধান্ত নেন। ফেরিতে উঠলেও হঠাৎ ঝোড়ো বৃষ্টি শুরু হলে পৌনে এক ঘণ্টার মতো ফেরিতে বসে ছিলেন। পরে পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে এলে তখন ঘাট থেকে ছেড়ে দেয় ফেরি।
রাত সাড়ে আটটার দিকে দৌলতদিয়া পৌঁছে দেখা যায়, ঢাকামুখী শত শত গাড়ি নদী পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ঘাট ছেড়ে দৌলতদিয়া টার্মিনাল পার হতেই দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বিভাজকের দুই পাশেই দুই লাইন করে চার লাইনে বিভিন্ন ধরনের গাড়ির লাইন। থেমে থেমে বেশ ধীরগতিতে এসব গাড়িকে সামনের দিকে এগোতে দেখা যায়।
গাজীপুর থেকে আসা কামরুল ইসলাম বিরক্তির সুরে বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী যেতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগে। সেখানে ফেরিঘাট থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার পথ আসতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, ঘাটস্বল্পতা আর যানবাহনের বাড়তি চাপের পাশাপাশি গতকাল রাতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছু সময় যানবাহন পারাপার ব্যাহত হয়েছিল। এতে দৌলতদিয়া প্রান্তে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে রাতভর অধিকাংশ গাড়ি পার হওয়ায় আজ সোমবার সকালে যানবাহনের চাপ অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে এসেছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয় ও ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দৌলতদিয়ার ৭টি ঘাটের মধ্যে বর্তমানে ৫টি চালু আছে। তবে নাব্যতা–সংকট দেখা দেওয়ায় মাঝেমধ্যে ড্রেজিংয়ের কারণে ৭ নম্বর ঘাটের একাধিক পকেট বন্ধ থাকছে। অন্যদিকে, পাটুরিয়ায় ৫টি ঘাটের মধ্যে ৫ নম্বর ঘাটে ভাসমান কারখানা মধুমতী থাকায় একটি পকেট দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকছে। এদিকে নাব্যতা–সংকটের কারণে ১ ও ২ নম্বর ঘাট প্রায়ই বন্ধ থাকছে।