ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগ, তিন পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সীমান্তবর্তী নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছোটধলি এলাকায় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যকে আটক করেন স্থানীয়রা
ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের এক ব্যবসায়ীর দেহ তল্লাশির সময় টাকা ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানার তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়নের ছোট ধলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যকে আজ সোমবার ফেনী জেলা পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জহিরুল হক এবং আদর্শগ্রাম তদন্ত কেন্দ্রের দুই কনস্টেবল কাউছার ও আনোয়ার হোসেন। সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি সাজেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সোনাগাজী থানার পুলিশ টহলে যাওয়ার পথে ওই ব্যক্তিকে সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি অস্বাভাবিক আচরণ করেন। এ সময় তাঁর দেহ তল্লাশি করতে গেলে তিনি চিৎকার দিয়ে আশপাশের লোক জড়ো করেন। পরে তিনি গিয়ে বিষয়টির মীমাংসা করে দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল-মামুনের নির্দেশে তিন পুলিশ সদস্যকে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সোনাগাজীর চর দরবেশ যাচ্ছিলেন ওই তিন পুলিশ সদস্য। পথে মুছাপুর ইউনিয়নের ছোট ধলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে শেখ ফরিদ নামের এক ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাঁকে তল্লাশি করেন। তিনি স্থানীয়ভাবে ছোটখাটো ব্যবসা করেন। একপর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য ওই ব্যক্তিকে তাঁদের অটোরিকশায় তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় শেখ ফরিদের চিৎকারে পার্শ্ববর্তী দোকান থেকে কয়েকজন এগিয়ে আসেন। তখন তল্লাশি করা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে একটি দোকানের ভেতর ঘেরাও করে রাখেন। পরে তাঁরা থানা ও মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীকে খবর দেন

সূত্র জানায়, রাত একটার দিকে চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ও সোনাগাজী থানার ওসি ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ওসি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে সোনাগাজী নিয়ে যান। তবে এ বিষয়ে জানার জন্য মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজিচালক মাসুদ আলম বলেন, সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে শেখ ফরিদ নামের ওই ব্যক্তিকে তল্লাশি করেন তিন পুলিশ সদস্য। এ সময় ওই ব্যক্তি চিৎকার দিলে পার্শ্ববর্তী দোকান থেকে লোকজন এসে সেখানে জড়ো হন।