ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কুকুরের আক্রমণে আহত শতাধিক, পিটিয়ে মারল উত্তেজিত জনতা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কুকুরের আক্রমণে নারী, শিশুসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। আজ বুধবার সকাল আটটার দিকে পৌর শহরের পৈরতলা এলাকায় একটি পাগলা কুকুর মানুষকে কামড়াতে শুরু করে। পরে কুকুরটি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে কামড়াতে থাকে। একপর্যায়ে স্থানীয় মানুষ উত্তেজিত হয়ে ওই কুকুরকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফয়েজুর রহমান প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় আজ সকাল থেকে বিভিন্ন বয়সী ১০০ মানুষ এ হাসপাতালে জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছে।
আহত ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের ভাষ্য, আজ সকাল থেকে বেলা দুইটা থেকে একটি পাগলা কুকুর শহরের পৈরতলা, নয়নপুর, পুনিয়াউট, সরকারপাড়া, কাজীপাড়া, ছয়বাড়িয়া, মধ্যপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিভিন্ন বয়সের মানুষকে কামড় দেয়। এ সময় শহরের বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে স্থানীয় মানুষ উত্তেজিত হয়ে ছয়বাড়িয়া এলাকায় ওই কুকুরকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
আহত মোহন মিয়া বলেন, ‘শহরের কাজীপাড়ায় একটি পাগলা কুকুর রাস্তার মানুষজন দেখলেই তাড়া করছিল। রাস্তায় যাকে পেয়েছে, তাকেই কামড় দিয়েছে। আমি পৈরতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে সরকার পাড়া এলে আমাকেও তাড়া করে। পরে কাজীপাড়া এলাকার পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের সামনে কুকুরটি আমাকে কামড় দেয়। পরে ওই কুকুড় আবার দৌড়ে কালীবাড়ির মোড় এলাকার দিকে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে আবার ২০-২৫ জনকে কামড় দিয়েছে।’
সদর উপজেলার বেতবাড়িয়া এলাকার হনুফা বেগম বলেন, তিনি কাজীপাড়া দাতিয়ারা এলাকায় একে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে রাস্তায় একটি পাগলা কুকুড় দৌড়ে এসে তাঁর বাঁ পায়ে কামড় দেয়। পরে তাঁর স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি টিকা নিয়েছেন।
কুকুরের আক্রমণে আহত ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনেরা আতঙ্কিত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে আসেন। পরে হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহত ব্যক্তিদের জলাতঙ্কের টিকা দেন।
আজ সকাল থেকে বেলা দুইটা থেকে একটি পাগলা কুকুর শহরের পৈরতলা, নয়নপুর, পুনিয়াউট, সরকারপাড়া, কাজীপাড়া, ছয়বাড়িয়া, মধ্যপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিভিন্ন বয়সের মানুষকে কামড় দেয়।
হাসপাতালের আরএমও ফয়েজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল ৪টা পর্যন্ত কুকুরের কামড়ে আহত ১০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত বেলা দুইটা পর্যন্ত হাসপাতালে টিকা দেওয়া হয়। তবে আজ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিকেল চারটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল সকাল থেকে আবার টিকা দেওয়া হবে।
জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, হাসপাতালে পর্যাপ্ত টিকার মজুত আছে। তাই আহত ব্যক্তিদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য তিনি পরামর্শ দেন।