ব্রি–২৮ ধান চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জগন্নাথপুরের কৃষক
অকাল বন্যা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি এড়াতে আগাম জাতের ধান ব্রি–২৮ চাষ করেন কৃষকেরা। তবে এবার ব্রি-২৮ চাষ করে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। উপজেলার কয়েকটি হাওর ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রি-২৮ চারায় এবার ধানের বদলে চিটা দেখা গেছে।
কৃষকেরা জানান, উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ও আগাম জাত হওয়ায় জগন্নাথপুর উপজেলার হাওরাঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরে ব্রি-২৮ ধান চাষ জনপ্রিয় হয়েছে। অকাল বন্যা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় এড়িয়ে আগে ফসল ঘরে তুলতে অধিকাংশ কৃষক জমিতে ব্রি–২৮ রোপণ করেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার নলুয়ার হাওরের কৃষক আবদুর রউফ জানান, সাত কেদার (৩০ শতকে ১ কেদার) জমিতে ব্রি–২৮ ধান লাগিয়েছিলেন। যেখানে কেদার প্রতি ২০ মণ ধান পাওয়ার কথা সেখানে সাত কেদার জমিতে ১৫ মণ ধান পেয়েছেন। বেশির ভাগ ধান চিটা হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
মইয়ার হাওরের কৃষক রজত গোপ বলেন, তিনি এ মৌসুমে তিন কেদার জমিতে ব্রি–২৮ লাগিয়ে হতাশ হয়েছেন। গাছে ধান না থাকায় কেউ ধান কাটতেও রাজি হচ্ছে না।
নলুয়ার হাওর ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত ব্রি-২৮ ধান চৈত্রের মাঝামাঝি সময়ে পাকতে শুরু করে। ফলনও বেশ ভালো হয়। আবার চৈত্রের শেষ দিকে অকাল বন্যাসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিলে ফসলহানির ঝুঁকি থাকে। তাই এবারও স্থানীয় কৃষকেরা আগাম ব্রি–২৮ রোপণ করেন। তবে ঠান্ডাজনিত কারণ ও ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে ব্রি–২৮ ধানের চারার ফলন নষ্ট হয়ে গেছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, কৃষকেরা এবার আগাম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দুশ্চিন্তায় আছেন। এর মধ্যে ব্রি-২৮ ধান নষ্ট হয়ে যাওয়া ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলায় ২১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্য সাড়ে তিন হাজার জমিতে ব্রি-২৮ আবাদ করা হয়েছে। তবে ঠান্ডাজনিত কারণে ব্রি-২৮ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। এবারের ফসলও ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।