ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে সড়ক ও কালভার্ট

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাহুটিয়াকান্দার সরকারি খাল থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার বাহুটিয়া কান্দা সরকারি খাল থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটা হচ্ছে। গতকাল তোলা
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাহুটিয়াকান্দা গ্রামসংলগ্ন বাহুটিয়াকান্দা সরকারি খাল থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে খালের উত্তর পাশে থাকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সড়ক ও একটি কালভার্ট ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে।

বাহুটিয়াকান্দা গ্রামের আলী হোসেন (৫০) নামের এক ব্যবসায়ী দুই দিন ধরে চারজন শ্রমিক দিয়ে সেখান থেকে মাটি উত্তোলন করে খালসংলগ্ন বসতভিটা নির্মাণ করছেন। আলী হোসেনের বড় ভাই প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হওয়ায় এ নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কেউ যদি ওই খাল থেকে মাটি উত্তোলনের চেষ্ঠা করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মো. মুনতাসির হাসান, ইউএনও

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাহুটিয়াকান্দা গ্রামের উত্তর পাশে বাহুটিয়াকান্দা সরকারি খালটির অবস্থান। ওই খালের পশ্চিম পাশে একটি কালভার্ট রয়েছে। ওই খালের কাছেই এলজিইডির একটি পাকা সড়ক রয়েছে। আলী হোসেন গত বুধবার সকাল থেকে সেখানে চারজন শ্রমিক দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বসতবাড়ির ভিটা নির্মাণ করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাহুটিয়াকান্দা গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, সরকারি এই খাল থেকে মাটি উত্তোলন করায় আগামী বর্ষা মৌসুমে এলজিইডির পাকা সড়কটি ও খালের ওপরে থাকা কালর্ভাটটি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। দ্রুত এ কাজ বন্ধ করা প্রয়োজন। আলী হোসেনের বড় ভাই প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হওয়ায় এ নিয়ে তাঁকে কেউ বাধা দিতে সাহস পাচ্ছেন না। দ্রুত এটি বন্ধ করা প্রয়োজন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ওই খাল থেকে চারজন শ্রমিক কোদাল দিয়ে মাটি কেটে তা খালসংলগ্ন স্থানে ফেলছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই বড় চাকরি করলেও এইডা নিয়া কারও সঙ্গে আমরা ক্ষমতা দেখাই না, কেউ তা বলতেও পারবে না। আমি খালের একপাশ থেকে মাটি তুলে তা খালের দক্ষিণ পাশে থাকা আমার জায়গায় ভিটা নির্মাণ করার কাজ করছি। সড়ক ও কালভার্টের যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকটি আমি খেয়াল রাখছি।’

ধর্মপাশা সদর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সেলিম মিয়া বলেন, ‘ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমি গতকাল বিকেল তিনটার দিকে সরেজমিনে গিয়ে সরকারি ওই খাল থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের সত্যতা পেয়েছি। মাটি উত্তোলন বন্ধ করেছি। ওই ব্যক্তি খাল থেকে আর মাটি তুলবেন না বলে আমার কাছে মৌখিকভাবে অঙ্গীকার করেছেন।’

ইউএনও মো. মুনতাসির হাসান বলেন, ‘খবর পেয়ে সেখানে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে (তহশিলদার) পাঠিয়েছিলাম। তিনি মাটি উত্তোলনের কাজটি বন্ধ করেছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কেউ যদি ওই খাল থেকে মাটি উত্তোলনের চেষ্ঠা করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’