রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি একটি একাডেমিক ভবন ও দুটি আবাসিক হল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। নির্মাণকাজের জন্য বড় ট্রাক, ট্রলিতে করে ইট, রড, বালুসহ নানা সামগ্রী ক্যাম্পাসে আনা হচ্ছে। যেসব রাস্তা দিয়ে এসব যান চলছে, সেগুলো অতিরিক্ত ওজনের চাপে দেবে ও ভেঙে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হল, চিকিৎসাকেন্দ্রের সামনের রাস্তা দুটির অনেক জায়গায় দেবে গিয়ে উঁচু-নিচু হয়েছে। কোথাও উঠে গেছে কার্পেট। বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে স্যার জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন হয়ে খালেদা জিয়া হলের পাশের রাস্তাগুলোরও বেহাল দশা। চারুকলা থেকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের রাস্তাটি আগে থেকেই অনেক জায়গায় ভেঙে আছে।
নির্মাণাধীন কাজগুলো শেষের মেয়াদ ধরা হয়েছে দুই বছর। প্রকৌশল দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, এর আগে রাস্তাগুলোর সংস্কারকাজ করা যাবে না। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের শঙ্কা, শীতকালে ধুলা-ময়লার সমস্যা আর বর্ষায় কাদাপানিতে এই রাস্তাগুলোর অবস্থা আরও বেহাল হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে বিশতলা একাডেমিক ভবন, ছাত্রদের জন্য দশতলা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান আবাসিক হল, স্যার জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের পশ্চিমে ছাত্রীদের জন্য দশতলা শেখ হাসিনা আবাসিক হল নির্মাণের কাজ চলছে। মাসখানেক আগে একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। আবাসিক হল দুটির পরীক্ষামূলক পাইলিংয়ের কাজ চলছে।
সম্প্রতি দেখা যায়, কামারুজ্জামান আবাসিক হলের নির্মাণস্থলের পাশে বালু, ইট, রডসহ নানা নির্মাণসামগ্রী রাখা। এগুলো বহনকারী ট্রাক চলাচলের কারণে মাদার বখ্শ হলের সামনে এবং বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের সামনের রাস্তা দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বেহাল রাস্তাগুলোয় চলতে গিয়ে রিকশা, অটোরিকশা, সাইকেল, মোটরসাইকেলের চালকদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মাদার বখ্শ হলের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, তিনি স্টেশন বাজারের কাছে একটি মেসে থাকেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই রাস্তা দিয়েই আসতে হয়। তখন যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়েন।
নির্মাণসামগ্রী বহনকারী ট্রাকগুলো মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকের সুইপার কলোনি হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তবে কিছু কিছু ট্রাক ক্যাম্পাসের অন্য প্রবেশপথগুলোও ব্যবহার করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্মাণকাজের কারণে রাস্তাগুলো যে খারাপ হবে, তা তো আগে থেকেই জানা ছিল। কারণ, এই রাস্তাগুলো সাধারণত ৫, ৭ বা ১০ টনের গাড়ি চলাচলের উপযোগী। কিন্তু এই রাস্তাগুলো দিয়ে ৪০, ৫০ টনের ট্রাকও চলছে। রাস্তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা প্রকল্পে না ধরাটা ভুল হয়েছে। এখন নির্মাণকাজ চলাকালে রাস্তাগুলো চলাচলের উপযোগী রাখার জন্যও চেষ্টা করা হবে।
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভেতরের কিছু রাস্তার জন্য এখন পর্যন্ত বড় কোনো প্রকল্প আসেনি। তবে আশা করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের সব কটি রাস্তা নিয়ে কাজ করা হবে। সে ক্ষেত্রে স্থায়িত্বের জন্য ঢালাই রাস্তাও করা হতে পারে।