সিংড়ায় সরকারি ভবন
ভাড়া না দিয়ে বছর পার
উপজেলা পরিষদের আবাসিক ভবনে থাকেন চারজন সরকারি কর্মচারী। তাঁদের মোট ভাড়া বকেয়া তিন লাখ টাকা।
আবাসন বরাদ্দ না থাকলেও নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের আবাসিক ভবনে কয়েক বছর ধরে বিনা ভাড়ায় বসবাস করছেন এক উদ্যোক্তাসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক ও নৈশপ্রহরীরা। তাঁদের কাছে উপজেলা পরিষদের বকেয়া বাড়িভাড়া দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকা। ভাড়া না পেয়ে সম্প্রতি তাঁদের ভবন ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
বসবাসকারী ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী, ডিজিটাল সেন্টারের এক উদ্যোক্তা, কৃষি অফিসের গাড়িচালক ও বিয়াম স্কুলের নৈশপ্রহরী।
সিংড়ার সরকারি বাসা বরাদ্দ কমিটি সূত্রে জানা যায়, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার গাড়িচালক সেলিম রেজা সরকারি বাসভবনের শাপলা ভবনের ৪ নম্বর ইউনিটে তিন বছর ধরে বিনা ভাড়ায় পরিবারসহ বসবাস করছেন। মাধবী ভবনের ১ নম্বর ইউনিটে তিন মাস ধরে বাস করছেন ইউএনওর কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী মোতালেব হোসেন।
এ ছাড়া ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ও সাবেক উপজেলা টেকনিশিয়ান রফিকুল ইসলাম চামেলি ভবনের ২ নম্বর ইউনিটে গত বছরের জানুয়ারি থেকে বসবাস করছেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের ট্রেনিং সেন্টারে ছয় মাস ধরে বাস করছেন বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নৈশপ্রহরী মো. ফজলু।
তাঁদের কাছে উপজেলা পরিষদের বাসাভাড়া বাবদ মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে তিন লাখ টাকা। বারবার নোটিশ দেওয়ার পরও তাঁরা ভাড়া পরিশোধ করেননি। সরকারি বাসা বরাদ্দ কমিটির পক্ষ থেকেও তাঁদের বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ইউএনওর কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী মোতালেব হোসেন বলেন, ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় ইউএনও তাঁকে সেখানে থাকতে দিয়েছেন। আগামী ডিসেম্বরে তিনি বাসা ছেড়ে চলে যাবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার গাড়িচালক সেলিম রেজার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বলেন, তিনি বাইরে আছেন। এসে কথা বলবেন। আর অন্য দুজন এ ব্যাপারে কথা বলতে চাননি।
পরিষদের চেয়ারম্যান ও সরকারি বাসা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদের সরকারি বাসভবনে বসবাস করতে হলে প্রত্যেককে সাড়ে চার হাজার টাকা করে ভাড়া দিতে হবে। কিন্তু তাঁরা ভাড়া পরিশোধ করেন না। বিনা ভাড়ায় সেখানে বসবাস করছেন। এতে সরকার তিন লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে।
শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, এই চারজনকে ভাড়া পরিশোধের তাগিদ দিতে সবশেষ উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানদের অনুরোধ করা হয়েছে। এরপরও যদি তাঁরা ভাড়া পরিশোধ না করেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।