ভুয়া সংগঠনের নামে সড়কের গাছ কেটে নেওয়া সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার
পাবনার সুজানগর উপজেলায় ভুয়া সংগঠনের নামে বিভিন্ন সড়কের দুই পাশ থেকে গাছ কেটে নেওয়া ইমান আলীকে (৬২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গাছ কাটার অভিযোগে সুজানগর পৌর ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবু বকর বাদী হয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে মামলা করেন। এ মামলায় রাতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে ইমানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ভুয়া ওই সংগঠনের নাম ‘সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্প’। এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্প নামের কোনো সংগঠনের অস্তিত্ব তাঁদের জানা নেই। ইমান আলী নিজেকে ভুয়া এই সংগঠনের সভাপতি দাবি করতেন। তাঁর বাড়ি সুজানগর উপজেলা সদরের ভবানীপুর মহল্লায়।
সমাজসেবা কর্মকর্তা জানান, ইমান আলী বন বিভাগের মালি ছিলেন। বছর দেড়েক আগে অবসরগ্রহণের পর ভুয়া সংগঠনটি করে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক থেকে গাছ কাটতে শুরু করেন তিনি। গত সপ্তাহে উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক থেকে শতাধিক গাছ কেটে নিলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। এ নিয়ে বুধবার প্রথম আলোতে ‘ভুয়া সংগঠনের নামে কেটে নেওয়া হচ্ছে সড়কের গাছ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সুজানগর থানা সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে। পরে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলায় ইমান আলীর বিরুদ্ধে সড়কের ৭০টি গাছ চুরির অভিযোগ আনা হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হান্নান মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, চুরি যাওয়া গাছগুলো উদ্ধারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, খুব দ্রুতই গাছগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাকো প্রতিবন্ধী সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের নামে ভুয়া সংগঠনটির সভাপতি পরিচয় দিয়ে ইমান আলী বছরখানেক আগে গাছকাটা শুরু করেন। গত এক বছর তিনি দুলাই, সাতবাড়িয়া ও ভায়না ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে তিন শতাধিক গাছ কেটে নিয়েছেন। তাঁর দাবি ছিল, ২০ বছর আগে তিনি গাছগুলো রোপণ করেছেন। উপজেলা প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়েই গাছগুলো কাটছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আজ দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রওশন আলী বলেন, পুরোপুরি অবৈধভাবে ওই ব্যক্তি সড়কের গাছ কেটেছেন। ঘটনা জানার পরই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত এক বছরে তিনি সড়কের কত গাছ কেটেছেন, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।