ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে যাওয়ায় দুর্ভোগে মানুষ

সাধারণত ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২৩ ফুটের নিচে নেমে গেলে নলকূপে পানি উঠে না। কিন্তু জামালপুর সদর উপজেলায় পানির স্তর ২৫ ফুটের নিচে নেমে গেছে।

জামালপুর জেলা শহর ও সদর উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। এসব এলাকার অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। ফলে সুপেয় ও গৃহস্থালির কাজের পানির সংকটে এসব এলাকার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, প্রচণ্ড দাবদাহ, বৃষ্টি না হওয়া ও অপরিকল্পিতভাবে ‘সাবমারসিবল পাম্প’ স্থাপনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। পৌর শহরে সাধারণত পানির স্তর ২৩ ফুটের নিচে নামলে হস্তচালিত নলকূপ থেকে পানি উঠে না। আর যদি তা ২৫ ফুটের নিচে নেমে যায়, তাহলে বাসাবাড়িতে মোটর দিয়ে পানি তোলাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। এখন পৌরসভা ও সদর উপজেলায় পানির স্তর ২৫ ফুটের নিচে নেমে গেছে।

জামালপুর পৌর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌর এলাকায় বেশিরভাগ পুকুর ও জলাশয় ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। শহরের আশপাশে জলাশয় নেই বললেই চলে। সাবমারসিবল পাম্প দিয়ে কিছু পানি পাওয়া গেলেও সাধারণ পাম্পগুলো পানি তুলতে পারছে না। নলকূপগুলোর শতকরা ৮০টিতেই পানি নেই। অনেক বাসাবাড়ির মানুষ বোতলজাত পানি কিনে পান করছেন। পানি সংগ্রহে দূরদূরান্তে ছুটছেন বাসিন্দারা।

গত শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, মুকন্দবাড়ি, পূর্ব মুকন্দবাড়ি, বজ্রাপুর, মৃধাপাড়া, ডাকপাড়া, বেলটিয়া, মুসলিমাবাদ ও পাথালিয়া এলাকার মানুষের বাড়ির নলকূপগুলোয় দুই মাস ধরে এক ফোঁটা পানি উঠে না। এসব এলাকার বাসাবাড়ির মোটর দিয়ে পানি উঠে না। সুপেয় পানির জন্য মানুষ প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেক পরিবার প্রতিবেশীর বাড়িতে থাকা সাবমারসিবল পাম্প দিয়ে উঠানো খাওয়ার ও গৃহস্থালির পানি সংগ্রহ করছেন। অনেকে আবার এলাকায় থাকা মসজিদের সাবমারসিবল পাম্প দিয়ে উঠানো পানি সংগ্রহ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় দুই মাস ধরে সদর উপজেলার ৮০ শতাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। জামালপুর পৌর শহরে পাইপলাইনের মাধ্যমে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পানির সমস্যা সমাধানে উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।