মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আ.লীগের ১০ ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৪৬ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে ১০ জন গতকাল রোববার মনোনয়নপত্র জমা দেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্র এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ১১ নভেম্বর শরীয়তপুর সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত ৪৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ নির্বাচনে ৮ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নতুন মুখ মনোনয়ন পেয়েছেন।

পালং ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল হোসেন দেওয়ান, সেখানে বিদ্রোহ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুলতান মুন্সি। তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদে মনোনয়ন পেয়েছেন স্থানীয় সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন, স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম। রুদ্রকর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা সিরাজুল ইসলাম ঢালী, স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবীবুর রহমান ঢালী।

আংগারীয়া ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা পরিষদ সদস্য আসমা আক্তার, স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন, চিতলিয়ায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হারুন অর রশিদ, স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা কমিটির সদস্য আবদুস সালাম হাওলাদার।

মাহমুদপুর ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন লিয়াকত হোসেন তালুকদার, স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান ঢালী। ডোমসার ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মিজান মোহাম্মদ খান, স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মজিবুর রহমান। শৌলপাড়া ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন আলমগীর হোসেন খান, স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মো. ভাষানী। চন্দ্রপুরে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা কমিটির অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম খান, স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক মোল্যা।

তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিদ্রোহী প্রার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে দলের জন্য কাজ করছি। সংকটের সময় শরীরের রক্ত ও ঘাম ঝরিয়েছি। আমরা দলের মূল্যায়ন পেলাম না। এখন বাধ্য হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছি।’

রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হাবীবুর রহমান বলেন, ‘আমি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। দুবারের চেয়ারম্যান, সফলতার সঙ্গে দলীয় ও ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালন করছি। স্থানীয় রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের কারণে মনোনয়ন পাইনি। জনসাধারণের আগ্রহে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছি।’

রুদ্রকর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, জয়ীও হতে পারবেন। যাঁরা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেছেন, তাঁদের দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, তৃণমূলের তালিকা থেকে বাছাই করে দলের মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। যাঁরা দল করেন, তাঁদের সবাইকে এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ আছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যাঁরা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।