মশা মারা নিয়ে চসিক সাধারণ সভায় বাগ্বিতণ্ডা
মশা মারার কার্যক্রম এবং ওষুধ কেনা নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাধারণ সভায় এক প্যানেল মেয়র ও এক কাউন্সিলরের বাগ্বিতণ্ডা হয়েছে। পরে সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও অন্যান্য কাউন্সিলরের হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় পুরোনো নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশনের দশম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনাবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোবারক আলীর মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
এ ছাড়া নগরের উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়েও সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম।
সভা সূত্র জানায়, সম্প্রতি নগরের প্রায় সব এলাকায় মশার উপদ্রব বৃদ্ধির অভিযোগ করেন কাউন্সিলররা। মশকনিধন কর্মসূচি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা। সভার একপর্যায়ে বক্তব্য দেন উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোরশেদুল আলম চৌধুরী। এ সময় মশকনিধন কার্যক্রম ও ওষুধ কেনার বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। তবে তাঁর বক্তব্য চলাকালে প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর কথা বলা শুরু করেন। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে মশার ওষুধ কিনে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আর মশকনিধন কার্যক্রম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
এ সময় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাবিষয়ক কমিটির সভাপতি মোবারক আলী প্যানেল মেয়রের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। তিনি প্যানেল মেয়রের উদ্দেশে বলেন, সিটি করপোরেশনের কেনাকাটার বিষয়ে কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। আর মশার ওষুধ কিনতে গেলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ (আইইডিসিআর) বিভিন্ন সংস্থার ছাড়পত্র লাগে। চাইলে হুট করে মশার ওষুধ কেনা যায় না। এরপর দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলতে থাকে। পরে মেয়র ও কাউন্সিলরদের হস্তক্ষেপে দুজন থামেন।
জানতে চাইলে মোবারক আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘একজন বক্তব্য দেওয়ার মাঝখানে আরেকজন কথা বলা দৃষ্টিকটু দেখায়। তবে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেওয়া হলেও আমাদের মধ্যে কোনো তিক্ততা নেই।’ আর আবদুস সবুরের মুঠোফোনে ফোন করা হলে সংযোগ কেটে দেন তিনি।
এদিকে সভায় অংশ নেওয়া দুজন কাউন্সিলর প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম সভায় বলেন, নগরের উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে প্রধান প্রকৌশলীর বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম বলেন, কখন এসব প্রকল্প অনুমোদন পাবে? কখন কাজ শুরু হবে। এদিকে ৯ মাস চলে গেছে। পাইপলাইনে আছে, অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, এসব বলে লাভ নেই।
এ প্রসঙ্গে প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। গতানুগতিক আলোচনা হয়েছে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নগরে যেসব উন্নয়নকাজ চলছে, তা ঝুঁকি ও ঝামেলামুক্ত হতে হবে। এসব কাজের কারণে যেন নাগরিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত ও জনদুর্ভোগ হয়ে না দাঁড়ায় এবং কাজগুলো নির্বিঘ্নে শেষ হয়, সে জন্য সব সেবা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
নগরের ফুটপাতগুলো অবৈধ দখলদারমুক্ত করে চলাচলের উপযোগী করার ঘোষণা দেন মেয়র। নগরের পরিচ্ছন্নতা ও মশকনিধন কাজে গাফিলতি হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মেয়র।