মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো বীর মুক্তিযোদ্ধার

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের দক্ষিণ সিন্দুনা গ্রামে ১৫ শতাংশ জমির দলিল ভুমিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জাম্মেল হকের হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর
ছবি: সংগৃহীত

দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধ করেছিলেন মোজাম্মেল হক। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূমিহীন। পরিবার নিয়ে থাকছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার রেলগেট বস্তিতে। ভাঙাচোরা ঘরে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর জীবনের এই দুর্দশার চিত্র নিয়ে গত ডিসেম্বরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধার এক সন্তান। বিষয়টি নজরে এলে উপজেলা প্রশাসন তাঁকে জমি ও ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হকের হাতে জমির দলিল তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল আমিন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সামিমা সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক রোকনুজ্জামান প্রমুখ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জাম্মেল হকের জন্ম দরিদ্র পরিবারে। নিজের কোনো জমি না থাকায় তিনি স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানকে নিয়ে রেললাইনের কাছে বস্তিতে বাস করতেন। ছিলেন স্থানীয় একটি বাজারের পাহারাদার। বয়স হয়ে যাওয়ায় ও অসুস্থ থাকায় তিনি আর চাকরি করছেন না। মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকায় চলে তাঁর সংসার। তাঁর জীবনের এই কষ্টের কথা তুলে ধরে ফেসবুকে স্টাট্যাস দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের হাতীবান্ধা উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক রোকনুজ্জামান। ফেসবুকের ওই স্ট্যাটাস নজরে আসে উপজেলা প্রশাসনের। এরপর ইউএনও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জমি ও ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের হাতীবান্ধা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক রোকনুজ্জামান বলেন, ‘ভূমিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জাম্মেল হককে নিয়ে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছিলাম। প্রশাসন বিষয়টি জানতে পেরে যে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে, তার জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ।’

এ বিষয়ে ভূমিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জাম্মেল হক বলেন, ‘বসবাসের জন্য জমির দলিল দেওয়ায় এবং ঘর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় ইউএনও ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অসংখ্য ধন্যবাদ।’

এ বিষয়ে হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমীন বলেন, ভূমিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জাম্মেল হক ও তাঁর স্ত্রীকে ১৫ শতাংশ জমি দেওয়া হয়েছে। শিগগির ওই জমিতে তাঁদের বসবাসের জন্য ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।