মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৮ জনের নামে মামলা

পটুয়াখালী জেলার মানচিত্র

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ঘর ভাঙচুর, দুই ভাইকে মারধর, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট এবং গাঁজা দিয়ে এক কিশোরকে (১৭) ফাঁসানোর অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তাসহ আটজনের নামে মামলা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল দ্বিতীয় আমলি আদালতে ওই কিশোরের বাবা আবদুল জলিল বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মুজাহিদুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী আরিফুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন বরিশাল বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিদর্শক ইশতিয়াক হোসেন, সহকারী উপপরিচালক মো. ফারুক হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক দিপংকর মণ্ডল, কার্যালয়ে কর্মরত ইমাম হোসেন ওরফে শামীম, আবদুল হামিদ, মো. সবুর, খন্দকার জাফর আহম্মেদ ও মো. হেলাল উদ্দিন। মামলার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন ইশতিয়াক হোসেন।

আদালত ও মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, ২ এপ্রিল আবদুল জলিলের দুই ছেলে একসঙ্গে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ছোট ছেলের বয়স ১৭ বছর। বড় ছেলের বয়স ২২ বছর। সকাল ৯টার দিকে ১২-১৪ জন ঘরের পেছনের দুটি দরজা ভেঙে ঘুরে ঢুকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দুই ভাইকে হাতকড়া পরিয়ে মারধর করেন। এ সময় তাঁরা ঘরের আলমারি ও অন্যান্য আসবাব ভাঙচুর করেন, আলমারি থেকে ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ও ৩ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে কিশোর ছেলেকে নিয়ে যান।

পরে বরিশাল বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিদর্শক ইশতিয়াক হোসেন বাদী হয়ে জলিলের কিশোর ছেলের নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বাউফল থানায় মামলা করেন। ওই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আবদুল জলিলের ছেলের খাটের নিচ থেকে ৫০০ গ্রাম গাঁজা ও গাঁজা বিক্রির ৭২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ মামলার সাক্ষী করা হয়েছে মো. সুমন (৩০) ও শ্যামল মিস্ত্রি (৩৫) নামের দুই যুবককে।

এ বিষয়ে মামলার ১ নম্বর সাক্ষী সুমন প্রথম আলোকে বলেন, মারধর ও ভাঙচুরের শব্দ শুনে তিনি ঘটনাস্থলে যান। তাঁর সামনেই দুই ভাইকে মারধর করা হয়েছে। পরে একটি কাগজে তাঁর (সুমন) স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তবে ওই ঘর থেকে কোনো গাঁজা উদ্ধার করা হয়নি। আর টাকা উদ্ধার করা হয়েছে আলমারি থেকে।

২ নম্বর সাক্ষী শ্যামল মিস্ত্রি বলেন, গাঁজা ওই ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়নি। টাকা উদ্ধার করা হয়েছে আলমারি থেকে।

এ ঘটনায় আজ প্রথম আলো ছাপা পত্রিকায় ‘গাঁজা দিয়ে কিশোরকে ফাঁসানোর অভিযোগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।