মাদকবিরোধী প্রচারণা চালানোয় সাজা মওকুফ
ঠাকুরগাঁওয়ে মাদক মামলার আসামি মো. আবদুল্লাহর (৫০) সাজা মওকুফ করে দিয়েছেন আদালত। দুই দিন আদালত চত্বরে মাদকবিরোধী প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার পর আজ মঙ্গলবার তাঁর সাজা থেকে মুক্তি দেন ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল হামিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আবদুল্লাহর বাড়ি রানীশংকৈলের রাউতনগর গ্রামে। ২০১৫ সালে ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ তিনি গ্রেপ্তার হলে তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। ২০১৭ সালে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
গত বুধবার আবদুল্লাহকে এক বছরের কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে আসামির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আদালতের কাছে আবেদন করেন। আবদুল্লাহও সৎভাবে জীবনযাপনের পাশাপাশি মাদকসংশ্লিষ্ট কাজ থেকে দূরে থাকার অঙ্গীকার করেন। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক আসামির অপরাধের শাস্তি কারাবাসের পরিবর্তে মাদকবিরোধী প্রচারণা চালানোর রায় দেন। গত রোববার থেকে সে রায় কার্যকর শুরু হয়।
রায়ে আবদুল্লাহকে মাদকবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে ১০ কর্মদিবস এক ঘণ্টা করে মাদকবিরোধী প্রচারণা চালাতে বলা হয়। আবদুল্লাহর বহন করা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘মাদক ব্যবসার জন্য আমি দুঃখিত, লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী’। ‘মাদক দেশ ও দশের শত্রু, মাদক পরিহার করুন’।
আদালতের রায় পেয়ে আবদুল্লাহ গত রোববার থেকেই প্ল্যাকার্ড নিয়ে আদালত চত্বরে এক ঘণ্টা করে দাঁড়াতে শুরু করেন। এ নিয়ে ১০ ও ১১ এপ্রিল প্রথম আলো অনলাইন ও প্রিন্ট সংস্করণে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আদালতের রায় মেনে আজও প্ল্যাকার্ড হাতে আদালত চত্বরে আসেন আবদুল্লাহ। এ সময় ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেন তাঁকে ডেকে নিয়ে মেয়েদের খোঁজখবর নেওয়ার পর তাঁর সাজা মওকুফ করে দেওয়ার কথাটি জানান।
আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্যার (বিচারক) আমাকে ভালোভাবে চলার পরামর্শ দিয়ে ক্ষমা করেছেন। আমি আর কোনো খারাপ কাজে জড়িত হব না।’
জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, ‘দ্য প্রবেশন অব অফেন্ডার অর্ডিন্যান্স ১৯৬০’ অনুযায়ী, দুই বছরের কম সাজার অপরাধের আসামিকে বিচারক সতর্ক করে ছেড়ে দিতে পারেন। জামিনদার রেখে বা না রেখে ছেড়ে দিতে পারেন। আবার সংশোধনের জন্য সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাজার আদেশও দিতে পারেন।