মাদারীপুরে পুলিশের সামনে প্রতিবেশীর ওপর হামলার ঘটনায় কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
পুলিশের সামনে এক পরিবারের ওপর হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগে মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার নয়াকান্দি এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসতিয়াক আশফাক আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলা নিয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত আরও দুজন পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, ধান মাড়াইয়ের কম্বাইন হারভেস্টর মেশিন ভাড়া করা নিয়ে প্রতিবেশী কৃষক ঝন্টু চন্দ্র মণ্ডলের সঙ্গে কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেনের কথা–কাটাকাটি হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানালে বুধবার বিকেলে পুলিশের তিন সদস্য দুই পক্ষের কথা শুনে সমাধান দিতে ঝন্টুর বাড়িতে আসেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতেই কাউন্সিলর ও তাঁর স্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে ঝন্টুকে মারধর করতে আসেন। ঝন্টুর ছেলে তাঁদের বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করেন কাউন্সিলর আনোয়ার ও তাঁর লোকজন।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালকিনি থানায় কাউন্সিলর আনোয়ারসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দেন কৃষক ঝন্টু চন্দ্র মণ্ডল। অভিযোগটি ওই দিন রাত ১০টায় মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন পুলিশ। পরে নয়াকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাউন্সিলর আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী ঝন্টু চন্দ্র মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলা করার পর আমরা আরও চাপে আছি। কাউন্সিলর এলাকায় প্রভাবশালী। তাঁর দাপটে অনেক লোকজন আমাকে নানাভাবে ভয় দেখাচ্ছে। মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে কাউন্সিলর আনোয়ার তাঁর বাড়িতে স্থানীয় কয়েকজন ও সংবাদকর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘ঝন্টুর ছেলে প্রথমে আমাকে থাপ্পড় দেওয়ার কথা বললে আমাদের সঙ্গে ঝন্টু ও তাঁর ছেলের হাতাহাতি হয়। এরপর পুলিশ সবাইকে ফিরিয়ে দিয়েছে। এখানেই ঘটনা শেষ। বরং আমাকে সবার সামনে অসম্মানিত করা হয়েছে। আমি জনগণের কাউন্সিলর, তাই স্থানীয় জনগণ ওদের প্রতিহত করেছে।’
কালকিনি থানার ওসি ইসতিয়াক আশফাক বলেন, সংখ্যালঘু ওই পরিবারকে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। মামলা তুলে নিতে যদি কাউন্সিলরের কোনো লোকজন তাঁদের হুমকি-ধমকি দেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।